ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া সুন্দরবনে পর্যটন শিল্পকে ঢেলে সাজানোর দাবি তললেন বসিরহাটবাসী| সাম্প্রতিক কালের কথা নয়, সেই ১৯৯৭ সালে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সুন্দরবনকে হেরিটেজ ঘোষণা করে ইউনেস্কো (UNESCO)| অথচ তারপর এতগুলো বছর কেটে গেলেও, বিক্ষিপ্ত কিছ উদাহরণ বাদ দিলে, সেভাবে নজর দেওয়া হয়নি সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প-সম্ভাবনায়| এবার সেদিকেই দৃষ্টি ফেরানোর আবেদন করছেন সমাজকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ|
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা মিলিয়ে মোট ব্লকের সংখ্যা ২১| এর মধ্যে বসিরহাট মহকুমাতেই রয়েছে ১০টি ব্লক| প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত, সুন্দরবনের প্রবেশদ্বারে রয়েছে হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর, মিনাখাঁ ও হাড়োয়ার মতো ব্লক| এরাজ্যের সবচেয়ে বড় মহকুমা বলে পরিচিত বসিরহাটে কম-বেশি ৩৫ লক্ষ মানুষের বাস| ফলত সুন্দরবনে পর্যটন শিল্পের উন্নতি হলে ভৌগলিক অবস্থানের নিরিখে বসিরহাটের অর্থনৈতিক ছবিটাই বদলে যাবে| সুন্দরবনে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় বাড়লে, বসিরহাটের বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়ে যাবে কয়েক গুণ| উপকৃত হবেন তাঁরা|
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর মোহানায় বঙ্গোপসাগরের ব-দ্বীপ সুন্দরবনের বিপুল প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য কারও অজানা নয় আর| ১০২টি দ্বীপ রয়েছে সুন্দরবন জুড়ে| এর মধ্যে ৪৮টি দ্বীপ জুড়ে বিস্তৃত ম্যানগ্রোভ অরণ্য| কাঁকড়া, হেতাল, ক্যাওড়া, সুন্দরী, গরান ও গেওয়া সহ ৬৬ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ (Mangrove) লক্ষ করা যায় এখানে| কম-বেশি ১,৫৮৬ প্রজাতির প্রাণী বাস করে সুন্দরবনে| রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger) তো গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত| এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির, সাপ সহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যকে বিস্ময়কর করে তলেছে| প্রতিবছর সেই বিস্ময়ে বিমুগ্ধ হতে দেশ-বিদেশ থেকে ছটে আসেন অসংখ্য পর্যটক| বসিরহাটের মানুষের দাবি, বিশ্ব-জোড়া কৌতহলকে সুপরিকল্পিত ভাবে পর্যটন শিল্পের আওতায় আনতে সচেষ্ট হোক সরকার|
সুন্দরবনকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় পর্যটনক্ষেত্রে পরিণত করতে পারলে, কর্মসংস্থানের বহুমাত্রিক সম্ভাবনায় গোটা এলাকাই উপকৃত হবে| ছোট, মাঝারি, এমনকি বড় শিল্পও গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকে কেন্দ্রীয় অবস্থানে রেখে| এছাড়া অনুসারী শিল্পের মধ্য দিয়ে প্রান্তিক মানুষের রুজিরুটিও নিশ্চিত করা যাবে তাতে| মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা|