কলকাতা : আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-তরুণীর নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনাস্থল বিষয়ে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্ষত-বিক্ষত মৃতদেহ থেকে ৪০ ফিট দূরের। দাবি কলকাতা পুলিশের। সোমবার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যাতে ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে বহু মানুষকে জড়ো হতে দেখা গিয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটিকে সামনে রেখে বিজেপি অভিযোগ করে, অপরাধ-স্থল পুলিশের ঘেরাটোপে ছিল না। বহিরাগতদের ভিড় হয়েছিল সেখানে। বহু তথ্যপ্রমাণাদি এ’ভাবেই বিকৃত করা হয়েছিল।
কিন্তু বিজেপির সেই-সমস্ত দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিল কলকাতা পুলিশ। তাদের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়, ‘সেমিনার হলের একদিকে দেহ ছিল। প্রথম যখন মৃতদেহ পাওয়া যায়, তখন সেই দেহ থেকে ৪০ ফিট দূরত্ব পর্যন্ত হাসপাতালের সাদা পর্দা দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ওই ৪০ ফিটের বাইরের, সেমিনার হলের বাকি ১১ ফিটের ভিডিও।’
ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের আরও দাবি, দেহ থেকে ৪০ ফিট দূরত্ব পর্যন্ত হাসপাতালের সাদা পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখা জায়গার বাইরে, সেমিনার হলের বাকি ১১ ফিটে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন ছিলেন। পুলিশকর্মীরা ছিলেন। হাসপাতালের কর্মীরা ছিলেন। অনেক ডাক্তারবাবু ছিলেন। ইমারজেন্সি মেডিক্যাল অফিসারও সেখানে বসেছিলেন বলে দাবি কলকাতা পুলিশের। চিকিৎসক-পড়ুয়াদের একাংশ ওই ১১ ফিট জায়গাতেই বসে ঘটনার বিষয়ে তাদের বক্তব্য লিখে দেয় পুলিশকে৷ ওখানে বহিরাগত কেউ ছিল না৷ দেহ থেকে ৪০ ফিট দূরত্ব পর্যন্ত হাসপাতালের সাদা পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখা জায়গায় কোনও বহিরাগতর প্রবেশ সম্ভব ছিল না৷ পুলিশবাহিনী সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ওই জায়গা বেষ্টন করে রেখেছিল। কোনওরকম অস্বচ্ছতা না রেখে, সাংবাদিকদের সামনে বিষয়টি তুলে ধরেছেন কলকাতা পুলিশের পদাধিকারী, ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখার্জি।
অর্থাৎ, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপির অভিযোগ খুব-একটা ধোপে টিকছে না। সামাজিক মাধ্যমে ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখার্জিকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এক্স (X) হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘সাংবাদিক বৈঠকটি ভালো লাগল। যুক্তি, উপস্থাপনা, প্রশ্নোত্তর যথাযথ। ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখার্জি ১০০-তে ১০০। কলকাতা পুলিশ এইভাবে ভুল প্রচারগুলির জবাবি যুক্তিগুলো সঙ্গে-সঙ্গে দিলে ভালোই হয়।’
ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপির সোচ্চার অভিযোগ জনমানসে জাঁকিয়ে বসার আগেই, কলকাতা পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক করে তা খারিজ করে দেওয়ায় কুণাল সহ রাজ্যের শাসকদলের নেতাকর্মীরা যথেষ্ট স্বস্তি পেলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে কি?