৩ আশ্বিন ১৪৩২ রবিবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩ আশ্বিন ১৪৩২ রবিবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডাবগ্রামের ফকদইবাড়িতে আঙর ফলাচ্ছেন রঞ্জিত দাস

High News Digital Desk:

ডাবগ্রামের ফকদইবাড়িতে আঙর ফলাচ্ছেন রঞ্জিত দাস:-

আঙুর মানেই বরফের রাজ্য কাশ্মীর, কিন্তু সেই কথা এখন অতীত| বাড়িতেই এখন পুঁই, চাল কুমড়ো, শাকসব্জীর মাচায় ঝুলছে থোকা-থোকা আঙ্গুর| হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন| পুঁই-মাচায় লাউ বা কুমড়ো নয়, ঝুলছে থোকা-থোকা আঙুর! অভিনব জৈব পদ্ধতিতে আঙ্গুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ির ফকদইবাড়ির এক যুবক| তীব্র মনোবল, অদম্য ইচ্ছে-শক্তি, এবং একনিষ্ঠ পরিশ্রমই যে অসাধ্য-সাধন করতে পারে, তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন ফকদইবাড়ির বাসিন্দা রঞ্জিত দাস| শখের তাগিদে আঙ্গুর চাষ করে অন্যদের পথ দেখাচ্ছেন শিলিগুড়ির এই যুবক| তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, মাঠে বা বাগানে নয়, ঘরের পিছনের পরিত্যক্ত জায়গায় হচ্ছে চাষ| ফেলে দেওয়া বাঁশ, বেত ব্যবহার করে জৈব পদ্ধতিতে ফলানো হচ্ছে এই আঙ্গুর ফল|
শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ডাবগ্রাম ২নং অঞ্চলের ফকদইবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিত দাস, যিনি পেশায় একজন অটোমোবাইল মেকানিক| সারাদিন কাজ করেন, আর কাজের ফাঁকে যতটুকু সময় বেঁচে থাকে, ততটুকু সময়কে অপচয় না করে কাজে লাগিয়েছেন তিনি| এবার তিনি ফলন ফলিয়েছেন, তাও আবার যে-সে কোনও ফলন নয়, আস্ত আঙ্গুর ফলের চাষ করেছেন বাড়িতে| আর সেই ফলনই বর্তমানে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে| অভিনব পদ্ধতিতে চাষ করা এই আঙ্গুর দেখতে প্রায় প্রত্যেকদিনই ভিড় জমাচ্ছেন পাড়া-পড়শিরা|
রঞ্জিত দাসের কথায়, তাঁর ভাইয়ের শ্বশুর ইসলামপুর থেকে আঙ্গুর ফলের একটি চারাগাছ এনে দিয়েছিলেন| সেই গাছটিই তিনি বসিয়েছিলেন বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জায়গায়| কিছুদিন পর দেখেন সেখান থেকে লতা-পাতা বেরোতে শুরু করেছে| ব্যাস, আর কি! শুরু হল গাছের পরিচর‌্যা| আর গাছও যথাযথ খাবার, পুষ্টি, জল পেয়ে বাড়তে শুরু করে দিল এবং ধীরে-ধীরে ডালপালা ছড়াতে শুরু করল| আর গাছগুলিকে ঠিকভাবে বাড়তে দিতেই ব্যবহার করা হয় পুঁইমাচার| গাছ লাগানোর দুবছর পর থেকে ফলও ধরতে শুরু করেছে| প্রথম বছরে সামান্য কিছু ফল ধরলেও, এই বছর গাছ ভর্তি করে থোকা-থোকা আঙ্গুরের ফলন হয়েছে| প্রথমে সৱুজ থাকলেও, পরবর্তীকালে হালকা লাল রঙ ধারণ করে| যদিও কাশ্মীরের আঙ্গুরের মতো মিষ্টি ফল কিন্তু মোটেও নয়| ওই যে শেয়াল আর আঙ্গুরের গল্পে আমরা পড়েছিলাম, বারংবার চেষ্টা করেও আঙ্গুর পারতে না পারায়, শেষমেষ শেয়াল বলেছিল আঙ্গুর ফল টক| ঠিক সেই দৃশ্যই যেন জ্বলন্ত হয়ে উঠেছে এখানে| নামে আঙ্গুর ফল হলেও, খেতে একেবারে তেঁতুলের মতো টক| অবশ্য এতে যে পরিচর‌্যায় কোনও খামতি রয়েছে তা কিন্তু নয়| রঞ্জিতবাৱুর দাবি, আবহাওয়ার জন্য এমন স্বাদ হয়েছে এই আঙ্গুর ফলের| কারণ আঙ্গুর ফল সাধারণত ঠাণ্ডা জায়গায় হয়, আর শিলিগুড়ির আবহাওয়া কার‌্যত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দিন-দিন| তাই স্বাদেও এইরকম পার্থক্য| তবে তিনি ভাবতেই পারেননি এত সহজে আঙুর ফলাতে পারবেন| বেশ উত্সাহ পেয়েছেন এই কাজ করে| তাঁর কথায়, গত বছর এই সময় অল্প পরিমাণে হলেও, এইবছর প্রচুর পরিমাণে আঙুর ফলেছে| প্রায় ১২ থেকে ১৪ কেজির মতো ফলন হয়েছে| এবার শুধু অপেক্ষা আঙুর ফল পরিপক্ক হওয়ার|

Scroll to Top