আড়িয়াদহ কাণ্ডে জয়ন্ত সিংকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল ব্যারাকপুর কমিশনারেট। জয়ন্তকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার তালতলার সেই ক্লাবে যায় পুলিশ। সঙ্গে আনা হয় জয়ন্তর দুই সাগরেদকেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, তালতলার এই ক্লাবেই সালিশি সভা বসাত জয়ন্ত-বাহিনী।সেখানেই ‘বিচার’ চালাতেন জয়ন্তরা। যুবককে মারের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেটিও এই ক্লাবের মধ্যেই করে জয়ন্তরা। কী ভাবে ক্লাবে এই কাজ চালাত তারা, তা বোঝার জন্যই তাদের ক্লাবে নিয়ে যায় পুলিশ। ক্লাবে কোন ঘরে বসত তারা, মারধরে কী ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল – ক্লাবে অভিযুক্তদের নিয়ে সেই সব জিনিস খতিয়ে দেখে পুলিশ।
বুধবার জয়ন্ত ও তার সঙ্গীদের ৬ দিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছিল বিচারক। তারপরই শুক্রবার তালতলা ক্লাবে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। আড়িয়াদহে ছেলে সহ মাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল জয়ন্ত। সে গ্রেফতার হওয়ার পরই তালতলা ক্লাবের ভিতরে যুবক-যুবতীকে নৃশংস মারের ভিডিও প্রকাশ্যে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২১ সালে আড়িয়াদহের বাসিন্দা রাহুল গুপ্তর বাড়িতে চুরি হয়েছিল। চোর সন্দেহে রাহুল এক যুবক ও এক যুবতীকে তালতলা ক্লাবে নিয়ে আসে। সেখানেই জয়ন্ত বাহিনী সালিশি সভা বসায়। লাঠি দিয়ে বেপরোয়া ভাবে মারা হয় তাদের। ভাইরাল হওয়া ভিডিওর মাধ্যমে সেই বীভৎসতার ছবি দেখে গোটা বাংলা। বিরোধীরা জয়ন্তর তৃণমূল যোগ নিয়ে অভিযোগ তুলতে শুরু করে। বিরোধীদের অভিযোগ, জয়ন্ত শাসক-ঘনিষ্ঠ হওয়ায় একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার মুম্বই যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘উপনির্বাচনে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুরোনো ভিডিও ছড়ানো হয়েছিল।’ এর পরেই নবান্ন থেকে বিরোধীদের সব দাবিকে খারিজ করে দেন মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের এডিজি-আইনশৃঙ্খলা মনোজ ভার্মা। রাজ্যের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, জয়ন্ত পুরোনো গুন্ডা। ২০১৬ সাল থেকে ৫ টি পৃথক মামলায় জয়ন্তকে কমপক্ষে ৫ বার গ্রেফতার করা হয়। ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই ফের আরও একবার পুলিশের জালে জয়ন্ত ও তার বাহিনী। ঘটনায় জড়িত থাকা বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চালাচ্ছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ।