কলকাতা : হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের শনিবারের রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড় দেশ| আদানি গ্রুপের কেলেঙ্কারির তদন্তে সেবির ভূমিকা নিয়েই উঠে গিয়েছে প্রশ্ন| কেননা, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বয়ং সেবির চেয়ারপারসন মাধবী পুরী বুচই অতীতে এমন বিদেশি ফান্ডে টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, অভিযোগ অনুযায়ী যা আদানি গ্রুপের আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত| এই নিয়ে স্বভাবতই কেন্দ্রের আদানি-ঘনিষ্ঠ শাসকের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা| তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সোচ্চার হয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে| এক্স (X) হ্যান্ডলে রীতিমতো নিজের ভিডিও প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি|
মহুয়া উল্লেখ করেছেন, ‘২০১৫-য় মাধবী পুরী বুচ ও তাঁর স্বামী ধবল বুচ যুগ্মভাবে এমন একটি বিদেশি ফান্ডে বিনিয়োগ করেন, যা গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানি ব্যবহার করেছিলেন| ২০১৭-র ফেব্রুয়ারিতে মাধবী পুরীর সেই বিনিয়োগ শুধুমাত্র স্বামী ধবল বুচের নামে পরিবর্তন করা হয়| ওই বছরেরই মার্চে মাধবী পুরী সেবির পূর্ণ সময়ের সদস্য হন|’
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন তাঁর ভিডিওয়| তিনি জানিয়েছেন, ‘২০১৯-এর এপ্রিলে মার্কিন ফার্ম ব্ল্যাক স্টোন সেবির থেকে ভারতে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায় বিনিয়োগের অনুমোদন পায়| ওই বছরই জুলাই মাসে ব্ল্যাক স্টোনের বরিষ্ঠ উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান মাধবীর স্বামী ধবল|’
মহুয়া তাঁর ভিডিওয় উল্লেখ করেছেন, ‘২০২২-এর মার্চে মাধবী পুরী বুচ সেবির চেয়ারপারসন হন|’ তারপরই তৃণমূল সাংসদের তাৎপর্যপূর্ণ শ্লেষ, ‘বাজারে কান পাতলে শোনা যায়, মাধবী পুরী বুচের সেবি চেয়ারপারসন হওয়ার পিছনে ধবল বুচের তুতো-ভাই সুধীর মানকড়ের হাত ছিল| এই সুধীর মানকড় আবার গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময় সেরাজ্যের মুখ্যসচিব ছিলেন|’
এক্সে পোস্ট করা ভিডিওয় মহুয়া মৈত্রর বক্তব্য, ‘২০২৩-২৪ কালপর্বে আদানির বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ খতিয়ে দেখে সেবিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট| সেবি, ততদিনে যার চেয়ারপারসন মাধবী পুরী বুচ, দেশের শীর্ষ আদালতকে জানায়, এমন কোনও বিদেশি ফান্ডের হদিশ পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি, যার ভিত্তিতে আদানি গ্রুপকে আর্থিক কেলেঙ্কারির কাঠগড়ায় তোলা যায়| ফলত সুপ্রিম কোর্টের কাছে ওই ধরনের কোনও বিদেশি ফান্ডের মালিকের নাম জানাতেও অপারগতা প্রকাশ করে সেবি|’
মাধবী পুরী বুচের উদ্দেশে মহুয়ার প্রশ্ন –
‘২০১৫-য় বিনোদ আদানির ব্যবহার করা বিদেশি ফান্ডে আপনি বিনিয়োগ করেছিলেন| অথচ আদানি গ্রুপের আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রমাণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিদেশি ফান্ডের মালিকের নাম আপনি জানেন না? ২০২৩-২৪ সময়কালে তদন্ত চলছিল যখন, তখন ওই বিদেশি ফান্ডে আপনার নিজস্ব অতীত বিনিয়োগের তথ্যসমূহ প্রকাশ্যে আনা উচিত ছিল না কি?’
আদানি গ্রুপের আর্থিক বেনিয়মে বিনোদ আদানির ব্যবহার করা বিদেশি ফান্ডের ভূমিকাকে শনিবার সামনে এনেছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট| ফলে বোঝাই যাচ্ছে, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর প্রশ্নবাণ যথেষ্ট তীক্ষ্ণ, তদুপরি অব্যর্থ-প্রায়|







