ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটনির ঘটনায় গ্রেফতার| বসিরহাটের রাজেন্দ্রপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ২ গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করল মাটিয়া থানার পুলিশ| সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার ওই গ্রামপঞ্চায়েতের মমিনপুর-উত্তরপাড়ায় এক যুবক বস্তা-কাঁধে ইতস্তত ঘোরাফেরা করছিলেন| তাঁকে ওভাবে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর| যুবককে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করতে শুরু করে তারা| যুবকের কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে বলে অভিযোগ| তাতেই মারমুখী হয়ে ওঠে উপস্থিত লোকজন| যুবককে বিদু্যতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে তারা| সেই বেআইনি অমানবিক ছবি এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে|
সোমবার গণপিটনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছটে যায় মাটিয়া থানার পুলিশ| তাতে প্রাথমিক ভাবে আরও উত্তেজনা ছড়ায়| পুলিশের গাড়িও ভাঙচর করে ক্ষিপ্ত জনতা| তবে শেষপর্যন্ত যুবককে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়| যদিও ওই যুবকের থেকে বস্তার অতিরিক্ত কিছ পাওয়া যায়নি| তাঁকে পুলিশ ধান্যকুড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়| প্রাথমিক চিকিত্সার পর কিছটা সুস্থ বোধ করেন তিনি| এরপর পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, যুবকের বাড়ি শাসন থানা এলাকায়| সেখানে খবর পাঠানো হলে, বাড়ির লোকজন এসে যুবককে নিয়ে যান|
ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটনি ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচরের তদন্ত শুরু করেছে মাটিয়া পুলিশ| ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে, মমিনপুর-উত্তরপাড়ার ২ বাসিন্দাকে গ্রেফতার করল তারা| ধৃতদের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে চায়, কোন তথ্যের ভিত্তিতে গণধোলাই? পুলিশকে খবর না দিয়ে কেন মারধর? কেন ভাঙচর করা হল পুলিশের গাড়ি? ২ ধৃতকে আজই বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ|
ছেলেধরা সন্দেহে গণধোলাইয়ের ঘটনা একেবারেই নতন নয়| বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একইরকম অভিযোগ আসছে| পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে| নির্দেশিকা জারি করে জনগণকে আইন হাতে না তলে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে নির্দেশিকায়| সেক্ষেত্রে কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে| তারপরেও বসিরহাটের মমিনপুর-উত্তরপাড়ায় ঘটে গেল একইরকম ঘটনা| একই সন্দেহ| এবং একইরকম সংঘবদ্ধ অপরাধ| প্রশ্ন হল, কে বা কারা কোন স্বার্থে গুজব ছড়িয়ে সংশয় ও উত্তেজনা তৈরি করছে এরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে? সামাজিক মাধ্যমের সৌজন্যে অধিকাংশ সচেতন নাগরিককে এমন প্রশ্ন তলতেও দেখা যাচ্ছে| এরই মধ্যে গ্রেফতারির পাশাপাশি তদন্ত চালাচ্ছে মাটিয়া থানা| ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে অন্যান্য অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা|
