ঘরের ভিতর হাঁটু-জল! এক-আধটা বাড়িতে নয়, এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একই হাল। একই প্রকার জলমগ্নতা। ও হ্যাঁ, জল বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাইছি, সেটাও খোলসা করা দরকার। নর্দমার নোংরা-পরিকীর্ণ দূষিত দুর্গন্ধময় জলের কথা হচ্ছে এক্ষেত্রে। হাঁটু-সমান পচা-কালো জল ঠেলেই চলছে ঘরকন্না। সামান্য বর্ষাতে লিলুয়ার মিরপাড়ায় ঘরে ঘরে ছবিটা এমনই – ফি-বছরের কিসসা!
এবার সেই একই কিসসায় অতিষ্ঠ হয়ে এনএস রোড অবরোধ করলেন মিরপাড়ার বাসিন্দারা। এবার অবশ্য ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার কারণও যথেষ্ট।
ছিটেফোঁটা বর্ষাতেই বাড়ির ভিতর নর্দমার জল ঢুকে যাওয়ার পিছনে মূলত দায়ী এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে চলা সংস্কারহীন মহানালা। এখানে নিকাশি ব্যবস্থাটা এমন যে, লিলুয়ার যাবতীয় বর্জিত জল ওই মহানালা দিয়ে গিয়ে পড়ে আনন্দনগর খালে। কিন্তু গত বেশকয়েক বছর ধরে মহানালাটির নিকাশি ব্যবস্থার কোনওরকম সংস্কার করা হয়নি। অভিযোগ মিরপাড়ার বাসিন্দাদের। পরিণামে বর্ষা এলেই গোটা এলাকা জুড়ে দেখা দিচ্ছে নোংরা জলের বিড়ম্বনা।
দিন ১৫ আগে, দুশ্চিন্তার ওই মহানালায় পড়ে গিয়েছিল এলাকার ৫ শিশু। সৌভাগ্যক্রমে তাদের উদ্ধার করা গিয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসার পর বর্তমানে সুস্থ ওই শিশুরা। তবু আতঙ্ক কাটেনি এলাকাবাসীর। আর সেই প্রবল আতঙ্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়া দুর্গন্ধময় দূষিত জলের বীভৎসতা।
বৃহস্পতিবার সকালে মিরপাড়ার কয়েকশো ক্ষুব্ধ বাসিন্দা ব্যস্ত এনএস রোড ৪ ঘণ্টার উপর অবরোধ করায় তৈরি হয় ব্যাপক যানজট। ঘটনাস্থলে ছুটে যান লিলুয়া থানার পুলিশ আধিকারিক ও বালি পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদের আশ্বাসে অবশেষে তুলে নেওয়া হয় অবরোধ। তবে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার ক’রে দূষিত জলের দুর্ভোগ থেকে এলাকাবাসীকে মুক্তি না দিলে, ভবিষ্যতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মিরপাড়ার বিক্ষোভকারীরা।