২৩ কার্তিক ১৪৩২ রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫
২৩ কার্তিক ১৪৩২ রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫

সিঙুরে ন্যানো বিদায়ের পর এবার বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য

High News Digital Desk:

সিঙুরে ন্যানো বিদায়ের পর এবার বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য:

ন্যানো বিদায়ের পর এবার বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য।সিঙুরের কারখানা উচ্ছেদের জন্য টাটাকে প্রায় ৭৬৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। সোমবার সন্ধ্যায় স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া তথ্যে একথা জানিয়েছে টাটা মোটরস। ট্রাইবুনালের নির্দেশ, রাজ্য ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে টাটা মোটরসকে। সঙ্গে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদও যুক্ত হবে। সব মিলিয়ে সুদ-সহ প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে। তৃণমূলের আন্দোলনের জেরে ২০০৮ সালে সিঙুর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় টাটারা। ততদিনে সিঙুরের কারখানায় তাদের প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে। ক্ষমতায় এলেই সিঙুরের জমি ফেরত দেবেন, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় এসেই সিঙুরের জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে মমতার সরকার। মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় টাটারা। সেখানে তাদের হার হয়। সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছেন। বলছেন, “রাজ্য সরকার তো দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। এবার তো রাস্তার ভিক্ষার পাত্র নিয়ে বসতে হবে। রাজ্য সরকারের অবিমৃষ্যকারিতার দায় এখন পশ্চিমবঙ্গবাসীকে দিতে হবে। এত কোটি কোটি টাকা কোথায় পাবে! এ তো সাংঘাতিক অবস্থা। অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি হয়ে যাবে। নবান্ন বিক্রি হয়ে যাবে। এরা যে রাজ্যকে কোন অন্ধকারে নিয়ে গেল, তা এবার টের পাওয়া যাবে। ভেবেছিল, টাটাকে তাড়িয়ে মহা মস্তি করবে। এবার তার অব্যর্থ পরিণতি পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষকে ভুগতে হবে।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যা চাইছেন, তাই তো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর চাহিদার বাইরে তো অন্য কিছু হচ্ছে না। টাটার দুটি মামলা। প্রথম হচ্ছে ওই জমি ফেরত, চাষীদের হাতে দিতে হবে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কাগজপত্র যা তৈরি ছিল, সেগুলি যথাযথভাবে পেশ করলেন না। রাজ্য সরকার  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হারতে চাইল, সেকারণেই হারল’। বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষের মতে, ‘আজকে এটা প্রমাণিত হল এই রায়ে যে, টাটাকে যে পথে বা যে পদ্ধতিতে বিদায় করা হয়েছে, সেটা ন্যায়সংগত হয়নি। আর্থিকভাবে ঝরাজীর্ণ এই সরকার এমনিতেই সংকটে রয়েছে। এই রায়ে রাজ্যের সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে’। সমালোচনা করছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীও। বলছেন, “প্রতিনিয়ত কখনও হাইকোর্টে, কখনও সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার ধাক্কা খাচ্ছে। টাটাকে ওখানে কারখানা করতে না দিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে ধাক্কা দিয়েছে। হুগলির অর্থনীতি একটা বড় জায়গায় পৌঁছত, রাজ্যের অনেক বেকার চাকরি পেত। সেটাকে তো ধ্বংস করেছেই, তাছাড়া ক্ষতিপূরণের অঙ্ক যদি সেই সময়েই দিয়ে দিত, তাহলে আজ আর ১১ শতাংশ সুদ চড়িয়ে দিতে হত না। এর দায় নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।”তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘আইনি ব্যাপার। যা মনে করেছে, দিয়েছে। লড়াইটা ছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে টাটা গোষ্ঠীর। এরপর সরকার চাইলে আরও উচ্চতর আদালতে যেতে পারে’।

Scroll to Top