যাদবপুর এলাকায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল এক স্কুল ছাত্রীর:
ফের ডেঙ্গুতে কলকাতায় প্রাণ গেল এক স্কুল ছাত্রীর। শনিবার দুপুরে যাদবপুর এলাকায় এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে। ২১ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরীর ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসে। জানা গিয়েছে, ওই কিশোরী সাত দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। গত একুশে সেপ্টেম্বর ডেঙ্গি পজেটিভ ধরা পড়ে। এদিন তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয়। বয়স মোটে ১২ বছর। যাদবপুরের বাসিন্দা ছিল ওই কিশোরী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাড়িতে রেখে ডোনার চিকিৎসা করা হচ্ছিল। একেবারে শেষ মূহুর্তে হাসপাতালে আনা হয়। আগে হাসপাতালে আনলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। বারবার বলা হচ্ছে, ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেই পরামর্শ কানে তুলছেন না অনেকে। মৃত ছাত্রীর মা দোলা দাস কান্নাভেজা গলায় জানিয়েছেন, মেয়ের জ্বরের চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু এত বাড়াবাড়ি হবে বুঝতে পারিনি। কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩। প্রাণ গিয়েছে এক চিকিৎসকেরও। মৃতের নাম দেবদ্যুতি চট্টোপাধ্যায়। ঢাকুরিয়ার শহিদ নগরের বাসিন্দা ছিলেন বছর আঠাশের ওই তরুণ। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে কর্মরত ছিলেন দেবদ্যুতি। ডেঙ্গি প্রাণ কেড়েছে যাদবপুরের বিশ্ববিদ্য়ালয়ের এক পড়ুয়ারও। ডেঙ্গি প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “ডেঙ্গির প্রকোপ আটকাতে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিচ্ছি। অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতায় ডেঙ্গি এখন অনেক কম। তা যাতে কম থাকে তার জন্য সব ব্যবস্থা করছি। এখন যেহেতু লকডাউন নেই। মানুষের যাতায়াত অনেক বেড়েছে। তাই ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মশা কোথায় কামড়াচ্ছে সেটা চিহ্নিত করা তো মুশকিল। তাই আমরা প্রচার আরও বৃদ্ধি করছি। মানুষ যাতে সচেতন হন তার জন্য প্রয়াস করছি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। যেমন বাড়ি বাড়ি যাওয়া, রক্ত পরীক্ষা করা এবং ফিভার ক্লিনিক চালু রাখা হয়েছে। এ নিয়ে প্রচারও করা হবে।”ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কলকাতার মেয়র। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, “কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রেরগুলি সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে এখন থেকে শনিবার ও রবিবার খোলা থাকবে কলকাতা পুরনিগমের স্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে রোগী থাকলে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসা করতে হবে।” স্বাস্থ্য দফতরের খবর অনুযায়ী, রাজ্যে গত ১০ দিনে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। এ বছরের শুরুতে যে সংখ্যাটা ছিল, তার কয়েকগুণ বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত দশ দিনে সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১,১০০ জন। চলতি বছরের শুরুতে ১ জানুয়ারি থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত যে সংখ্যাটা ছিল ২,৭৯০ জন। সেখানে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৮০২ জন।