৪ আশ্বিন ১৪৩২ রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৪ আশ্বিন ১৪৩২ রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মমতা দিদির জন্যই দিদিকে ফিরে পেল ভাই। মেয়েকে ফিরে পেল বাবা-মা।

High News Digital Desk:

৫ বছরে পর নিজের মেয়েকে খুঁজে পেল পরিবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরদিদিকে বলোপোর্টাল মেয়েকেফিরিয়েদিলপরিবারেরকাছে।

বিগত পাঁচ বছর আগে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যায় শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি থানা এলাকার অম্বিকা নগরের রুম্পা মজুমদার। তখন রুম্পার বয়স ছিল ৩০।

একদিন বাড়ি থেকে বেরোনোর পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তার। আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবসবজায়গায়খোঁজাখুঁজিরপরেওরুম্পারখোঁজমেলেনি।

রুম্পার বিয়ে হয়েছিল শিলিগুড়িতেই। শ্বশুর বাড়ি থেকেই নিখোঁজ হয়েছিল সে। ১০ বছরের ছেলেকে বাড়িতে রেখেই নিখোঁজ হয় সে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পাশাপাশি বাপের বাড়ির লোকজনও অনেক খোঁজাখুঁজি করেছিল তার।থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ ও দায়ের হয়েছিল। কিন্তু আর খোঁজ মেলেনি।

কিন্তু মা বাবার মন তো আর মানে না,বিগত পাঁচ বছর ধরে হন্য হয়ে মেয়েকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন তারা। চোখের কোনায় জল নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন পথেঘাটে!

মা কাজল মালাকার এবং বাবা গজন মালাকার সব সময় কাঁদতেন মেয়ের জন্য।

কোথায় গেল রুম্পা, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না পরিবারের লোকজন! কার সাথে গেল? কেন গেল? কেউ কি অপহরণ করল? নানান প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতো তাদের!

অনেক সময় রাজ্যের বিভিন্ন থানা এলাকায় মহিলার মৃতদেহ পাওয়ার খবরে আঁতকে উঠতো পরিবারের লোকেরা!

খোঁজখবর নিতেন তার মেয়ে নয়তো!

বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে নারী পাচারের খবর মনকে যন্ত্রনা দিত! পতিতাপল্লীতে মেয়েদের বিক্রি করার খবর দুমড়ে মুছড়ে দিয়েছিল পরিবারের সকলকে।

পরিবারের সকলের মনে একটাই প্রশ্ন ছিল রুম্পা এই পৃথিবীতে আছে তো?

অবশেষে পাঁচ বছর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হল রুম্পা মজুমদারের বাপের বাড়ির লোকজন!

না,কালীঘাটে বা নবান্নে গিয়ে নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের মানুষের জন্য তৈরি দিদিকে বলো পোর্টালেআমার মেয়েকে খুঁজে দিন দিদিএমনই অনুরোধ করেন রুম্পা মজুমদারের পরিবারের লোকজন।

রুম্পা মজুমদারের পরিবারের এই কাতর আরজি দেখতেই, নবান্নের তরফে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, রুম্পামজুমদারেরনিখোঁজহবারঘটনাটিরতদন্তপুনরায়শুরুকরতে।

তৎক্ষণাৎ শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার নিউ জলপাইগুড়ি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে নির্দেশ দেন, অম্বিকানগরেররুম্পামজুমদারেরনিখোঁজসংক্রান্তঘটনারতদন্তেরঅগ্রগতিরকাজশুরুকরারজন্য।

যেমন নির্দেশ তেমন কাজ, তড়িঘড়ি তৈরি হয় একটি টিম! রুম্পা মজুমদারের পরিবারের থেকে সংগ্রহ করা হয় নানান তথ্য, সেখান থেকে পাওয়া যায় আধার কার্ডের নম্বর,আর সেই আধার কার্ডের নম্বর থেকেই তদন্তের অগ্রগতি শুরু করে নিউ জলপাইগুড়ি থানা তদন্তকারী অফিসারেরা।

আধার কার্ড খতিয়ে দেখে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ জানতে পারে, নদিয়া জেলার নাকাশীপাড়া এলাকায় রুম্পা মজুমদারের আধার কার্ড দিয়ে একটি ব্যাংকে একাউন্ট করা হয়েছে। তড়িঘড়ি নিউ জলপাইগুড়ি থানার একটি টিম রওনা দেয় নদীয়ার নাকাশিপাড়া তে। নাকাশীপাড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় নির্দিষ্ট ওই ব্যাংকে পৌঁছায় নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ। এরপর ওই ব্যাংক থেকে বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করে নাকাশিপাড়া এলাকায় বর্তমান রুম্পা মজুমদারের ঠিকানায় পৌঁছে যায় নিউ জলপাইগুড়ি থানার তদন্তকারী অফিসারেরা। অবশেষে রহস্যের অবসান। পুলিশ দেখে চমকে যায় রুম্পা মজুমদার সহ তার পরিবারের লোকজন। পাঁচ বছর পরেও মাবাবা তাকে খুঁজছে জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। তবে, ভালো আছে রুম্পা, আবার সংসার বেঁধেছে সে। নতুন সংসারে দুই বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

কিন্তু নিয়মকানুন মেনে রুম্পাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ। সোমবার নাকাশিপাড়া থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি থানার উদ্দেশ্যে রুম্পাকে নিয়ে রওনা দেয় তদন্তকারী অফিসারেরা। মঙ্গলবার রুম্পার সাথে তার পরিবারের লোকজনের পাঁচ বছর পর দেখা। কান্নায় ভেঙে পড়লেন সকলেই। কিন্তু আবার নতুন জীবন গড়েছে রুম্পা। পরিবারের লোকজন রুম্পাকে দেখেই খুশি। মেয়ে বেঁচে তো আছে।

আইন কানুন মেনে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ রুম্পাকে জলপাইগুড়ি আদালতে পাঠায়। অপরদিকেদিদিকে বলোতেএকটা এসএমএস যে পাঁচ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে চোখের সামনে এনে দেবে, তা ভাবতেও পারেনি রুম্পার বাপের বাড়ির লোকজন। রুম্পার ভাই মুখ্যমন্ত্রীর দিদিকে বলোতে নিজের দিদিকে ফিরে পাওয়ার কাতর আরজি করেছিলেন। অবশেষে দিদিকে ফিরে পাওয়ায়

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে প্রণাম জানিয়েছেন রুম্পার পরিবারের লোকজন।

Scroll to Top