মেয়রের ফোনেই বরফ গলল, ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছেন মেয়র পারিষদ তারক সিং:
আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে জমা জলের সমস্যায় নাজেহাল মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পুরসভার নিকাশি দফতরের বিরুদ্ধে। প্রকাশ্য়ে এসেছিল মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মেয়র পারিষদ তারক সিংয়ে লড়াই। কলকাতায় জল জমা সংক্রান্ত একটি ফোনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে বড় ফাটল তৈরি হয়েছিল। এমনকী পদত্যাগের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন তারক সিং। শনিবার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ফোন পেয়ে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিং বললেন, ‘‘কোনও দ্বন্দ্ব নেই। ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে।’’ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারক সিং দাদার মতো। তাঁর জ্বর হয়েছে। অসুস্থ। জ্বরের সময় মানসিকতা একটু অন্যরকম থাকে। তাই হয়তো রেগে গিয়েছেন। আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। শহরে জল জমা নিয়ে গতকাল তারক সিং কী বলেছিলেন? তারকবাবু বলেন, আমার মনে হয় না এক্ষেত্রে কোনও ভুল ত্রুতি রয়েছে। তার পরেও কোনও কাজ করতে গেল এরকম হতে পারে। উনি বলার অধিকার রাখেন। এক্ষেত্রে আমার কোনও দোষ নেই। গোটা বিষয়টির জন্য আমি দুঃখিত। দায়িত্ব নিয়েই বলছি আমি কাল ইস্তফা দিয়ে দেব। কারণ মানুষের আত্মসম্মানের উপরে কিছু হতে পারে না। ঘটনার শুরু শুক্রবার। টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে জমা জল নিয়ে অভিযোগ আসতেই তাল কেটেছিল। যেখান থেকে অভিযোগ আসে, তার কাছেই আগের দিন বিকেলে নিজের আত্মীয়ের মৃত্যুতে গিয়েছিলেন মেয়র। পৌঁছে দেখেন জল থৈ থৈ। অভিযোগ তোলেন, ‘‘জল জমা নিয়ে ভুল রিপোর্ট আসছে। আমাকেই গতকাল বলা হল, খিদিরপুরে কোথাও জল জমে নেই। এদিকে আমার ভাই কাল মারা গিয়েছে। মোমিনপুরে পিসির বাড়িতে গিয়ে দেখি সেখানেই জল থৈ থৈ। অবস্থা এমনই মৃতদেহ মাটিতে রাখা যাচ্ছে না।’’ মেয়রকে এও বলতে শোনা যায়, ‘‘রোজ তারক সিং হোয়াটসঅ্যাপ করে বলছে কোত্থাও জল জমে নেই। খিদিরপুর গিয়ে আমি নিজে জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে ।’’ ঘরে তখন পুর কমিশনার, একাধিক বিভাগের ডিজি-সহ একাধিক ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত। ভরা সভায় মেয়রের কথায় আহত হন নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং ।তবে শনিবার তারক সিং দাবি করেন মেয়র তাঁকে ফোন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে। তিনি ইস্তফা আপাতত দিচ্ছেন না।তবে পুরসভার অন্দরে কান পাতলে শোনা যায় তারক সিংয়ের প্রতি বেশ আস্থাভাজন ফিরহাদ হাকিম। তবে শুক্রবার দিনটা কোনওভাবে তাঁদের মেজাজ কিছুটা হয়তো অন্যরকম ছিল। সেক্ষেত্রে জল জমা নিয়ে অভিমানের জল অন্যদিকে গড়িয়েছিল।