৩ কার্তিক ১৪৩২ মঙ্গলবার ২০ অক্টোবর ২০২৫
৩ কার্তিক ১৪৩২ মঙ্গলবার ২০ অক্টোবর ২০২৫

হাতিদের নিয়ন্ত্রণ করেন গণেশ

High News Digital Desk:

হাতিদের নিয়ন্ত্রণ করেন গণেশ:-

শিলিগুড়িতে হাতির হাত থেকে বাঁচতে গণেশ পুজো! আবার হাতির দলই সেই গণেশের মূর্তি নিয়ে গিয়ে ভাসান দেয়| হাতির হাত থেকে বাঁচতে গণেশই ভরসা| জাগ্রত এই মন্দিরে অধিষ্ঠাতা দেবতা গণেশ ঠাকুরই নাকি দেখভাল করেন গ্রামবাসীদের| মন্দির প্রতিষ্ঠার পর গ্রামবাসীদের ওপর একচিলতে আঁচও পড়েনি| কারণ স্বয়ং গণপতির সঙ্গে নাকি যোগাযোগ রয়েছে হাতিদের| মন্দিরের দেবতার ইশারায় চলে হাতিরা| কি? অবাক লাগছে শুনে? তবে এটি কোনও ৱুজরুকি নয়, ঠিক এমনটাই ঘটছে বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের ভিতরে থাকা এক মন্দিরে| তার চেয়েও অবাক করা বিষয় হল, এই মন্দিরে বতর্মানে গণেশের কোনও মূর্তি নেই| মূর্তি-পুজো করা হলেও, দেখা যায় হাতিরা সেই মূর্তি নিয়ে চলে গিয়েছে| শিলিগুড়ি শহরের খুব কাছেই পানিয়া-ফাফড়ি কামাতপাড়া গ্রাম| একসময় প্রচুর লোকবসতি ছিল এই গ্রামে| প্রায় একশোরও বেশি পরিবারের বসবাস ছিল এই গ্রামে| কিন্তু ধীরে-ধীরে তা কমে এখন মাত্র ৩টি পরিবারে এসে ঠেকেছে| হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, মাত্র ৩টি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি গ্রাম| সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, অন্য কোথাও নয়, এমন গ্রাম রয়েছে শিলিগুড়ি শহরের অদূরেই| অথচ কেউই জানে না সেই গ্রামের হদিশ| চারিদিকে জঙ্গল, আর তার মাঝখানে রয়েছে পানিয়া-ফাফড়ি কামাতপাড়া এলাকা| শিলিগুড়ি শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট| আর সেই ফরেস্ট লাগোয়া রেঞ্জ অফিস| সেখান থেকে আরও কয়েক কিলোমিটার এগোলেই দেখা যাবে এই গ্রাম| যেখানে শহুরে কোনও অভ্যাসই ঢুকতে পারেনি| খড়ের ছাউনি, মাটির ঘড়, মেঠো পথ| সন্ধ্যে হলে লাইট নয়, জ্বলে বাতি| বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য রয়েছে স্কুল| তবে জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশ হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সেখানে হাতির আনাগোনা শুরু হয়| হাতির হানায় গ্রামবাসীদের মৃতু্য পর‌্যন্ত হয়েছে|
প্রায় ২০ বছর আগেকার কথা| এক কিশোরীকে পায়ে পিষে মেরে ফেলেছিল একটি দাঁতাল হাতি| এই সবটাই ঘটেছিল গ্রামবাসীদের চোখের সামনে| গ্রামের ছোট্ট মেয়েটিকে এভাবে পদপৃষ্ট হয়ে মরতে দেখে ভয় ঢুকে গিয়েছিল গ্রামবাসীদের মনে| এছাড়া মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ঢুকে ঘড়-বাড়ি নষ্ট করে, ঘরে থাকা সামগ্রী খেয়ে চলে যেত দামাল হাতির দল| একপ্রকার হাতির উত্পাতে অতিষ্ট হয়েই একে-একে গ্রাম ছাড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা| তবে এখনও যদি সেই গ্রামে ঢোকেন, ফিরে আসতে চাইবেন না আপনি| গ্রাম্য পরিবেশ তো রয়েইছে, পাশাপাশি সেখানে রয়েছে প্রাচীন একটি মন্দির| যেখানে বসবাস স্বয়ং গণপতি বাবার| হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে তৈরি করা হয়েছে এই গণেশ মন্দির| যদিও মন্দিরে গণেশের কোনও মূর্তি নেই, পুজো করা হয় বেদীতে| তবে সারাবছর বেদীতে পুজো হলেও, বাত্সরিক পুজোর সময় গণেশ মূর্তি দিয়েই হয় পুজো| কিন্তু পরের দিন সকালে দেখা যায় হাতি নিজেই এসে মূর্তি নদীর ধারে রেখে এসেছে| এছাড়াও গ্রামবাসীদের কথায়, মন্দিরের দেবতা অনেক জাগ্রত| তাঁর কথা শোনেন হাতির পাল| ওই মন্দির তৈরির পর থেকে নাকি হাতির উত্পাত তেমন নেই| এমনকি মন্দিরে এসে ধূপকাঠি, মোমবাতি জ্বালিয়ে যাঁরাই পুজো দিয়ে যান, তাঁদেরই মনস্কামনা পূর্ণ হয়| কি? আসবেন নাকি একবার এই মন্দিরে আপনার মনস্কামনা পূর্ণ করার জন্য পুজো দিতে?

Scroll to Top