৩ আশ্বিন ১৪৩২ রবিবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩ আশ্বিন ১৪৩২ রবিবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘সেনাপতিকে সামনে চাই,’ কুণাল ঘোষের বার্তায় জল্পনা তুঙ্গে

কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ নিয়ে শনিবার কুণাল ঘোষের সমাজমাধ্যমে করা পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। সমাজমাধ্যমে করা পোস্টে কুণাল আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সেনাপতি অভিষেককে সক্রিয়ভাবে সামনে চেয়েছেন। কুণাল তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘আরজি কর। আমরাও প্রতিবাদী। দোষী/দোষীদের ফাঁসি চাই। তৃণমূল ও বাংলার বিরুদ্ধে শকুনের রাজনীতি করছে বাম-রাম। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ সব রুখতে লড়াইতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সক্রিয় ভাবে সামনে চাই।’

কুণাল ঘোষ যে পোস্ট সমাজমাধ্যমে করেছেন, তাতে রয়েছে ‘আমাদেরও কিছু ভুল শুধরে সঠিক পদক্ষেপে সব চক্রান্ত ভাঙতেই হবে।’ কুণাল তাঁর করা পোস্টে ‘ভুল শুধরে’ নেওয়ার কথা লিখেছেন। এতে কুণাল বুঝিয়ে দিয়েছেন, কিছু পদক্ষেপে ভুল রয়েছে। অর্থাৎ আরজি কর কাণ্ড সামলাতে ‘ভুল’ হয়েছে। কুণালের পোস্ট ঘিরে সামনে আসছে অনেক প্রশ্ন। কোন ভুলের কথা বলতে চাইলেন কুণাল? সেই ভুল কি প্ৰশাসনিক, নাকি সাংগঠনিক? তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি তৃণমূল নেতা। সন্দীপ ঘোষকে ইস্তফার চার ঘণ্টার মধ্যেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ করা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই রয়েছে দ্বিমত। সন্দীপ ঘোষকে অধ্যক্ষ হিসাবে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, এদিন তা আরও একবার মনে করিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে, এই সিদ্ধান্তকে মানুষ ভালো চোখে দেখেনি। পরোক্ষভাবে তিনি কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই আঙুল তুলতে চাইলেন? সন্দীপকে যে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হচ্ছে, সে’কথা জানিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক কি সত্যি নিষ্ক্রিয়? দলের অন্দরে এখন সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, হঠাৎই অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের দফতর সংবাদমাধ্যমে যোগাযোগ রাখার কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। ওই কাজের দেখভাল আপাতত করছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর দফতর। এই ঘটনায় নতুন করে দলের সঙ্গে অভিষেকের ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আরজি করের ঘটনায় সরকার অথবা দলের একাংশের প্রতি কি অসন্তুষ্ট অভিষেক? তাই কি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব ছাড়ল তাঁর দফতর? উঠছে প্রশ্ন।

আরজি করের ঘটনার পর অভিষেক বলেছিলেন, ‘যারা এই কাজ করে, তাদের এনকাউন্টার করা উচিত। সরকারি টাকায় লালনপালন করার কোনও প্রয়োজন নেই।’ বুধবার রাতে আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ। সেই রাতে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সে কথা উল্লেখও করেন সামাজিক মাধ্যমে তাঁর পোস্টে। ভাঙচুরের ঘটনায় অপরাধীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিও তুলেছিলেন তিনি।

কুণাল ঘোষের পোস্ট নিয়ে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘অভিষেক সব সময় সক্রিয় আছেন। আমাদের সাথে আছেন। আমরা আর কতদিন? অভিষেকরা নেতৃত্ব দেবেন। কোনও মতভেদ নেই। ওর চোখের সমস্যা আছে।’ কুণালের ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টের জেরে আরজি কর ইস্যুতে কি এক হবে তৃণমূল, নাকি দলের অন্দরে আরও চওড়া হবে ফাটল? উত্তর দেবে সময়।

Scroll to Top