অবশেষে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে মিলল মীমাংসা সূত্র। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করে ৩ মাসের মধ্যে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জটিলতার শুরু। সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হওয়ার পর সেই সংঘাত চরমে ওঠে। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সার্চ কমিটি গঠন নিয়েও রাজ্য-রাজ্যপাল মতবিরোধ দেখা দেয়। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, ৩ মাসের মধ্যে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, শীর্ষ আদালতের অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বে গঠন করতে হবে ৩ সদস্যের সার্চ কমিটি। ইউ ইউ ললিত কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে সব ক’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কমিটি অথবা আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করতে হবে। প্রত্যেক কমিটিতে থাকবেন ৫ জন সদস্য।
প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের জন্য ৩টি করে নাম বাছাই করবে সার্চ কমিটি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, সার্চ কমিটি ৩টি করে নাম বাছাই করে তা পাঠাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রদত্ত নামের তালিকা থেকে বেছে নেবেন একটি নাম। সেই নাম রাজভবনে পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সার্চ কমিটির দেওয়া নাম পছন্দ না হলে, মুখ্যমন্ত্রী শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। আবার মুখ্যমন্ত্রীর বাছাই করা নাম রাজ্যপালের পছন্দ না হলে, তিনিও শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
উপাচার্য পদে নিয়োগের জন্য দিতে হবে বিজ্ঞাপন, যার খরচ বহন করবে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স (X) হ্যান্ডলে লেখেন ‘উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের যে বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্ট তার সে’কথাই বলেছে।’ তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া, ‘আবারও গণতন্ত্রের জয় হল।’
বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নেই স্থায়ী উপাচার্য। রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের জেরে ভুগতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও পড়ুয়াদের। সুপ্রিম কোর্টে বহুদিন ধরেই উপাচার্য নিয়োগ মামলার শুনানি চলছে। অবশেষে শীর্ষ আদালত বাংলার উপাচার্য সমস্যার সমাধানে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল। এমতাবস্থায় আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে কাজ শুরু করতে হবে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর, বাংলার শিক্ষাবিদরা আশান্বিত। তাঁরা চান, ‘দ্বন্দ্ব কাটুক। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে আসুক কাঙ্ক্ষিত গতি।