আমেরিকায় জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের নিয়ম কার্যকর হলে বিপদে পড়বেন হাজার হাজার ভারতীয়! মূলত আমেরিকায় প্রবাসী ভারতীয় দম্পতি, যাঁরা সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁরাই সমস্যায় পড়বেন বলে অনেকে মনে করছেন| যদিও আইনি জটে আটকে ডোনাল্ড ট্রাম্পে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের ভাবনা| যদি ট্রাম্পের ঘোষণা আদালতের সৱুজ সঙ্কেত পায়, তবে চাপে পড়বেন অনেকেই| বহু ভারতীয়ই কর্মসূত্রে আমেরিকায় পাড়ি দেন| এইচ-১বি ভিসা নিয়ে মার্কিন মুলুকেই বাস করেন তাঁরা| এমনকি, বিয়ের পর সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকার পরিকল্পনাও করেন| সে দেশের আইন অনুযায়ী, আমেরিকায় যদি কোন সন্তানের জন্ম হয়, তবে সে জন্মসূত্রেই নাগরিকত্ব পেয়ে থাকে! তবে ট্রাম্প দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হয়ে হোয়াইট হাউসে প্রবেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ১৫৬ বছরের পুরনো আইন বদলানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দেন| গত ২১ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত এক সরকারি নির্দেশনামায় সই করেছিলেন ট্রাম্প| কিন্তু তার পরেই বিষয়টি যায় আদালতে|
অক্ষয় পাইস নামে এক ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার স্ত্রী নেহাকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকেন| তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা| কিন্তু ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা|
অনেক দম্পতিই চাইছেন, নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগেই সন্তানের জন্মের| অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা ঝুঁকছেন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানপ্রসবের দিকে| জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব ছাড়াও, এইচ-১বি ভিসা ধারণকারী সন্তানেরাও আইনি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন| আমেরিকায় দ্বিতীয় বৃহত্তম অভিবাসী গোষ্ঠী ভারতীয়| আমেরিকায় পাঁচ লক্ষের বেশি লোকের কাছে অনভিবাসী ভিসা রয়েছে| নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন| নতুন নিয়মের অধীনে, অনভিবাসী ভিসা ধারণকারীদের সন্তান আমেরিকায় জন্ম নিলেও নাগরিকত্ব পাবে না!
প্রসঙ্গত, আমেরিকার আইনে জন্মসূত্রের নাগরিকত্বকে বলা হয় জুস সোলি| যার অর্থ হল মাটির অধিকার| যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা হয়েছে, সেখানে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশুকে স্বাভাবিক ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে| সেই শিশুর মা-বাবা অন্য দেশের নাগরিক হলেও সে জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিকত্ব পাবে| ১৮৬৮ সালে ১৪তম সংশোধনীতে এই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টিকে আমেরিকার সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল| ভোটের প্রচারে ট্রাম্প বারে বারেই দাবি করেছিলেন জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যেই দেশে অভিবাসী সমস্যা বাড়ছে| অবৈধ অভিবাসীদের সন্তান আমেরিকায় জন্ম নিলেও যাতে নাগরিকত্ব না পায়, তা নিশ্চিত করতেই সক্রিয় হয়েছিলেন ট্রাম্প|