রাজ্যের বনমন্ত্রী পদে থাকছেন রেশন দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হওয়া মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই:
জ্যোতিপ্রিয় গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই বনমন্ত্রকের দায়িত্ব ওই দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা সামলাচ্ছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে বালুর মন্ত্রক বণ্টন নিয়ে কোনওরকম আলোচনা না হওয়ায়, ধরে নেওয়া হচ্ছে আপাতত বীরবাহাই ওই দায়িত্ব সামলাবেন। তবে মন্ত্রী পদে জ্যোতিপ্রিয়ই থাকবেন। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতার নিয়ে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘বালুকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা সবাই সংগঠনটা দেখে নিও।’ দীর্ঘদিন ধরে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সংগঠনের দায়ভার ছিল তাঁর কাঁধে। তিনি জেলে য়াওয়ার ফলে সংগঠনে বড়সড় ফাঁক তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে সংগঠনে দুর্বলতা তৈরি হতে পারে। রেশন দুর্নীতির অভিযোগে ইডি হেফাজতে আছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর এই গ্রেফতারের ঘটনায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। আবার জ্যোতিপ্রিয় নিজেই বলেছেন, সবটাই ষড়যন্ত্র। হাত রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ঝাড়গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বীরবাহা হাঁসদা। নবান্ন সূত্রে খবর, মন্ত্রীর সই প্রয়োজন হলে বীরাবাহাই সেটা দেখে নিতে পারবেন। সরকারিভাবে সেটাই নিয়ম। তারপর তো মুখ্যমন্ত্রী আছেনই। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তড়িঘড়ি তাঁর মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হলেও জ্যোতিপ্রিয়র ক্ষেত্রে কিন্তু দেখা গিয়েছে অন্য চিত্র। তাঁর হয়ে ব্যাটন ধরেছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। তাঁর তোলা যড়যন্ত্রের তত্ত্বে সিলমোহরও দিয়েছেন। সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। দলের বেশ কয়েকজন নেতাকে উত্তর ২৪ পরগনার সংগঠনকে আরও সময় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্রাত্য বসু,পার্থ ভৌমিক, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, রথীন ঘোষদের সেই দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। জ্য়োতিপ্রিয়র মল্লিকের বাড়িতে ইডির তল্লাশির পর ইডির ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অসুস্থ জ্যোতিপ্রিয়র কিছু হলে তিনি ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। তল্লাশির দিনই রাতে গ্রেফতার করা হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। ওই গ্রেফতারির পরই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধীরা। পাল্টা মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রীও। সাংবাদিক সম্মেলন করে রেশন দুর্নীতির দায় তিনি বাম সরকারের উপরে চাপিয়ে দেন। তিনি দাবি করেন বাম আমলে তৈরি হওয়া ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড তৃণমূল আমলে বাতিল করা হয়েছে। রেশন ব্যবস্থা ডিজিটাইজড করা হয়েছে। রাজ্যের ওই প্রচেষ্টা কেন্দ্রের কাছে প্রশংসা পেয়েছে। বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সব কিছুকেই গেরুয়া রং করে দিচ্ছে। মাঠ,হাসপাতাল,অফিস সব কিছুকেই ওরা গেরুয়া রং করে দিচ্ছে।” সম্প্রতি কেন্দ্রের ন্যাশনাল হেলথ মিশন নিয়োগে পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য বলেই মন্ত্রিসভা সূত্রে খবর। জ্যোতিপ্রিয়কে মন্ত্রীপদ থেকে যেমন সরানো হয়নি, তেমনি উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতির পদ থেকেও সরানো হয়নি। তবে সামনেই যেহেতু লোকসভা ভোট, তাই তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজকর্মে যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকেও নজর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়









