রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়:
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের নিরীখে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সাক্ষাৎ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ৪০ মিনিটে পর বেরিয়েও গেলেন তিনি। সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মূলত বিজয়ার পর শুভেচ্ছা বিনিয়ম করতে এসেছিলেন তিনি। বাংলার প্রশাসনিক প্রধান এবং সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে আজ, সেটা কেউ খোলসা করেননি। যদিও রাজভবন থেকে বেরনোর সময় গাড়ি থামিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানালেন ভিতরের কথা। বললেন, “বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। বিজয়ার পর এটা আমাদের সৌজন্য।”বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাতে লেগেই থাকে। পুজোর আগে একশোর দিনের কাজে কেন্দ্রের বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, উপাচার্য নিয়ে রাজ্যপালকে নিশানা করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘একজন রাজ্যপাল বসে আসেন এবং সব বদলে দিয়েছেন। হৃদয় বিদারক সব কাজ করছেন। বলেছি, এসব করবেন না। টাকা দেব আমরা আর মধ্যরাতে যাদবপুরের উপাচার্য বদলে গেল। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বদলে দিচ্ছেন’। সঙ্গে হুঁশিয়ারি, ‘আর্থিক বাধা তৈরি করবে। দেখি কী করে বেতন দেন’। দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহী। রাজভবন–নবান্নের মধ্যে একাধিক ইস্যুতে মতান্তর হয়েই রয়েছে। সেটা উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে বিল আটকে রাখা–সহ নানা বিষয় আছে। এই আবহেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলায় রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পায়ের চোটের সমস্যায় প্রায় মাস দেড়েক বাড়িতেই বিশ্রামে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুজোতেও দেখা যায়নি তাঁকে। ভারচুয়ালি সমস্ত পুজোর উদ্বোধন সেরেছেন। তবে গত ২৭ অক্টোবর রেড রোডে দুর্গাপুজো কার্নিভ্যালে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর মঙ্গলবার থেকে নবান্নে যাতায়াত শুরু করেছেন। আর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি গেলেন রাজভবনে, রাজ্যপালের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। দুর্গাপুজোর মরশুমে রাজভবনে গিয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রাজ্যপাল বোসকে জাগো বাংলার শারদ সংখ্যা ও মিষ্টির প্যাকেট উপহার দিয়েছিলেন তিনি। এরপর অষ্টমীর সকালে কুণালের পাড়ার পুজোয় দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল বোসকেও। তৃণমূল মুখপাত্রকে পাশে নিয়ে অষ্টমীর অঞ্জলি দিয়েছিলেন বোস। বিশ্বভারতীর ইউনেস্কো ফলককে ঘিরে কার্যত একই অবস্থানে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ও প্রশাসনিক প্রধানকে। রাজভবন থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ”আমি শ্রীমতী নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে গিয়েছিলাম হাসপাতালে। উনি অধ্যাপিকা ছিলেন। নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা। আমার সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলাপ, দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি অসুস্থ শুনে আমি গিয়েছিলাম দেখতে। ওঁর অবস্থা খুবই সংকটজনক। যেমন দেখেছিলাম আগে, আর আজ যা দেখলাম, তার মধ্যে অনেক তফাৎ। ওঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।










