তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সমালোচনায় সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে, মালদহে যা ঘটেছে, এটা এখানকার তৃণমূল সরকারের নিষ্ঠুরতার একটি উদাহরণ।” বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। গত দশকে, বিজেপি সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আজ আমরা সিটি গ্যাস বিতরণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। কেন্দ্রের প্রচেষ্টার জন্য কল্যাণী এইমস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং নতুন আলিপুরদুয়ার রেলওয়ে স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। উত্তর ভারতে মাল পরিবহন বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সমর্থন করার জন্য ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডোর (ডিএফসি) প্রকল্পটি তৈরি করা হচ্ছে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ মন্ত্র নিয়ে, বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “বাংলার মানুষ আর টিএমসি সরকারের ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখে না। এখানকার মানুষের এখন কেবল আদালতই ভরসা। এই কারণেই গোটা বাংলা বলছে আমরা নির্মম সরকার চাই না!” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “এখন পশ্চিমবঙ্গ একের পর এক সংকটের মুখোমুখি। প্রথমটি হল ব্যাপক হিংসা এবং আইনহীনতা যা সমাজের কাঠামো ভেঙে ফেলছে। দ্বিতীয়টি হল মা ও বোনদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি, যা তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ভয়াবহ অপরাধের ফলে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তৃতীয়টি হল ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এবং সুযোগের অভাবের কারণে তরুণদের মধ্যে গভীর হতাশা। চতুর্থটি হল ব্যাপক দুর্নীতি, যা ব্যবস্থার উপর জনসাধারণের আস্থা হ্রাস করে চলেছে। পঞ্চম সংকটটি শাসক দলের স্বার্থপর রাজনীতি থেকে উদ্ভূত, যা দরিদ্রদের তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। মুর্শিদাবাদ এবং মালদার ঘটনাগুলি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের নিষ্ঠুরতা এবং জনগণের দুর্দশার প্রতি উদাসীনতার স্পষ্ট উদাহরণ।”
তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সরকার নিজস্ব শাসনকালে হাজার হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিগ্রস্তরা দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েদের অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের একটি জনসভা থেকে আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলার জন্য ‘নগর গ্যাস সরবরাহ’ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ওই প্রকল্প ১০১০ কোটি টাকার। তাতে দুই জেলায় আড়াই লক্ষ পরিবারকে পাইপলাইনের মাধ্যমে রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা হবে। শতাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকেও পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করার বন্দোবস্ত হবে। এ ছাড়া প্রকল্পটির আওতায় ওই দুই জেলায় ১৯টি সিএনজি স্টেশনও তৈরি হবে, যাতে সিএনজি চালিত যানবাহনে জ্বালানি ভরার সমস্যা কমে।
এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “একবিংশ শতাব্দীতে, ভারত নতুন শক্তির সঙ্গে সমৃদ্ধির এক নতুন গাথা লিখছে। এখন দেশের প্রতিটি নাগরিক ভারতকে একটি বিকশিত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছে। বিকশিত ভারত গড়তে হলে, পশ্চিমবঙ্গেরও উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, পশ্চিমবঙ্গকেও নতুন শক্তি নিয়ে একত্রিত হতে হবে।” প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বাংলাকে আবারও সেই একই ভূমিকায় আসতে হবে যা একসময় তার পরিচয় ছিল। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গকে আবারও জ্ঞান ও বিজ্ঞানের কেন্দ্রে পরিণত করা প্রয়োজন। বাংলাকে মেক ইন ইন্ডিয়ার একটি বড় কেন্দ্রে পরিণত করা উচিত। বাংলার উচিত নিজস্ব ঐতিহ্যের উপর গর্বিত হয়ে এবং তা সংরক্ষণ করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেছেন, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এই সংকল্প নিয়ে কাজ করছে। বিজেপি পূর্বোদয়ের নীতি অনুসরণ করছে। গত দশকে, বিজেপি সরকার এখানকার উন্নয়নের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এখন পশ্চিমবঙ্গ একইসঙ্গে অনেক সংকটে ঘেরা। একটি সংকট হলো সমাজে ছড়িয়ে পড়া হিংসা এবং নৈরাজ্য। দ্বিতীয় সংকট হলো মা ও বোনদের নিরাপত্তাহীনতা, তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ঘৃণ্য অপরাধ। তৃতীয় সংকট হলো তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া চরম হতাশা, ব্যাপক বেকারত্ব। চতুর্থ সংকট হলো ব্যাপক দুর্নীতি, এখানকার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। পঞ্চম সংকট হলো শাসক দলের স্বার্থপর রাজনীতি, যা দরিদ্রদের অধিকার হরণ করে।”










