নিজস্ব সংবাদদাতা: বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বৃহস্পতিবার উঠে এল ২০২১ সালের ২ মের কথা। বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনার ওই দিনের কথা তুলে তিনি খোঁচা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সরাসরি প্রশ্ন তুললেন, ‘‘নন্দীগ্রামে দু’ঘণ্টা লাইট বন্ধ করে দিয়ে কী হয়েছিল ভুলে গেলেন?’’ পরে সাংবাদিক বৈঠক করে এর জবাব দেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, ‘‘আমি যখন নন্দীগ্রামের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছিলাম, আমায় বাধা দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এটা বিচারাধীন বিষয়। আজকে সেই বিচারাধীন বিষয় নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করলেন এবং তা বিধানসভার কার্যবিবরণীতে ঠাঁই পেল।’’
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বিধানসভায় আলোচনার আর্জি জানিয়েছিল বিজেপি। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে সম্মতি জানানোয় আলোচনা শুরু হয় বৃহস্পতিবার। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে নন্দীগ্রামে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর আগেই বক্তব্য রাখেন শুভেন্দু। তিনি মূলত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে শাসক দলের ভূমিকার নিন্দা করেন তাঁর বক্তব্যে। বলেন, ‘‘এ বার ভোট যা করেছেন আগামী বছর সুদে আসলে হিসাব দিতে হবে।’’
এর পরেই মমতা বলতে উঠে, শুভেন্দুর নাম না নিয়েও বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, ‘‘যিনি এর আগে বললেন তিনি তৃণমূলে ছিলেন। কিন্তু তিনি আগের কথা, সিপিএম জমানার কথা বললেন না।’’ মমতা ভোটে হিংসার বিষয়টি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়ি হিসাবে তুলে ধরে বলেন, ‘‘কেন্দ্র যেমন ভোট করায় না, তেমন রাজ্য সরকারও করে না।’’ এর পরেই প্রশ্ন তোলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে দু’ঘণ্টা লাইট বন্ধ করে দিয়ে কী হয়েছিল ভুলে গেলেন?’’
মমতা এই প্রশ্ন তোলার পরেই শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্পিকার সকলকে বসতে অনুরোধ করলেও বিক্ষোভ চলতে থাকে। অন্য দিকে, মমতার বক্তৃতাও চলতে থাকে। তিনি বলেন, ‘‘যেটা আলোচনা হয়, সেটাই আমি বলছি। আমারও কথা বলার অধিকার রয়েছে। এটা নিয়ে তো মামলা হয়েছিল। সেই মামলা এখনও চলছে।’’
এর পরেই বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়াকআউটের সময়ে কালো কাপড় দেখিয়ে ‘শেম শেম মুখ্যমন্ত্রী’ ধ্বনি তোলেন বিজেপি বিধায়করা।