প্রায় দুমাস পেরিয়ে গেলেও এখনও উপাচার্যহীন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় :
নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রায় দু’মাস পেরিয়ে গেলেও এখন অব্দি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে| যার জেরে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের| প্রচলিত পাঠ্যক্রমের বাইরে আগস্ট থেকে স্নাতক স্তর পর্যন্ত নয়া শিক্ষানীতিতে পঠন-পাঠন চালু হয়েছে| যার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে উপাচার্যের অনুমোদন প্রয়োজন| এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজকর্ম, বিশেষ করে কোনও উন্নয়নমূলক কাজের অনুমোদন পাওয়া, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার নির্ধারিত সময় থেকে পঠন-পাঠন, সবক্ষেত্রেই উপাচার্যের সিদ্ধান্ত জরুরী| উচ্চশিক্ষা দফতর এবং রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কার্যত উপাচার্য্যহীন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়| ১ জুন, ২০২৩ থেকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও উপাচার্য নেই| উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে উপাচার্য পদে কাউকে দায়িত্বও দেওয়া হয়নি| তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারই বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন| উপাচার্য না থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলিতেও পরীক্ষা-প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে| যার ফলে চিন্তায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা| বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জানাচ্ছেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকমাস আগে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুটি হোস্টেলের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন| কিন্তু ইতিমধ্যেই হোস্টেলের ভবন তৈরি হয়ে গেলেও এখনও হোস্টেল চালানো নিয়ে চরম সমস্যায় পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা| যার ফলে বাধ্য হয়েই অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে| হোস্টেল পরিষেবা দ্রুত চালু হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা| পাশাপাশি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হোক, সেই বিষয়েও সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীরা| যদিও এই বিষয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার রাজীব পুততুন্ডু জানিয়েছেন, ‘১ জুন থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই| তা সত্ত্বেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন ভালোভাবেই চলছে| ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে| তবে যেসব কাজের ক্ষেত্রে উপাচার্যের অনুমোদন খুবই দরকার, সেইসব কাজগুলি আপাতত করা যাচ্ছে না| বিভিন্ন দফতরের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে| বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য হোস্টেল তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে| আমরা আশা করছি, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই হোস্টেল পরিষেবা চালু হয়ে যাবে| তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের যে বিষয়টি সামনে এসেছে তা খুবই দুঃখজনক| তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি রয়েছে| যেহেতু এখানে হোস্টেল পরিষেবা এখনও চালু হয়নি, সেক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের কোনও প্রসঙ্গ নেই| হোস্টেল পরিষেবা চালু হলে র্যাগিংয়ের বিষয়টি আমরা অবশ্যই মাথায় রাখবো’| যদিও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, তবে আরও বেশকিছু জায়গায় সিসিটিভি নেই| উপাচার্য দায়িত্ব নিলে সেই সব জায়গাতেও সিসিটিভি পরিষেবা চালু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি|