পরে কে কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন, সেটা বিবেচ্য নয়… ৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার দাবিদার, বাংলাদেশবাসীকে স্মরণ করালেন সে’দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে এ’কথা যখন তিনি বলছেন, তখন চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার দাবিতে উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাজনীতি। শুধু উত্তপ্ত বললে কম বলা হবে। আন্দোলনকারী তথা বিএনপির ছাত্র-সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উপর পুলিশ, আওয়ামি যুবলিগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলিগের ‘হামলা’য় সে’দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঝরে গিয়েছে ছ-ছটি প্রাণ। জখম ৩০০-র বেশি।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম-রংপুরে নিহত হয়েছেন ৬ আন্দোলনকারী। ঢাকাতে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বাধিক। লাঠিচার্জেই সক্রিয়তা সীমাবদ্ধ রাখেনি পুলিশ, গুলিও চালিয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি, কোথাও-কোথাও পাল্টা আক্রমণের অভিযোগও উঠেছে। আন্দোলনকারীদের রোষের মুখে ছাত্রলিগ ও যুবলিগ।
সমস্যার সূত্রপাত সরকারি কর্মসংস্থানে সংরক্ষণ নিয়ে। বাংলাদেশে চাকরির ক্ষেত্রে ৫৬% কোটার ব্যবস্থা চলে আসছে বহুকাল ধরে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পারিবারিক প্রজন্মের জন্য ৩০% আসন সংরক্ষিত থাকে। এই কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে ২০১৮-য় পিছিয়ে পড়া জাতি ও বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা অব্যাহত রেখে বাকি সব কোটা তুলে দেওয়ার নির্দেশ জারি করে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। কিন্তু ২০২১-এ সে’দেশের আদালত হাসিনা-মন্ত্রিসভার ওই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। ফলে সরকারি কর্মসংস্থানে আগের কোটা ব্যবস্থাই পুনর্বহাল হয়। এবার তারই বিরুদ্ধে তীব্রতর ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশে।
পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আন্দোলনকারীরা অনড় অবস্থান নেওয়ায় এবং শাসক দল আওয়ামি লিগের দমন নীতির জেরে অবস্থা আরও ঘোরালো হচ্ছে, মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। বুধবারও হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কায় কাঁপছে বাংলাদেশের জনজীবন।