আগুনে ঝলসে প্রাণ গেল মা ও ছেলের। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বাবা। বোলপুরের রায়পুর সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রজতপুর গ্রামে মর্মান্তিক ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাত। প্রত্যেক দিনের মতোই খাওয়া-দাওয়া সেরে বছর চারেকের ছোটছেলে আয়ান শেখকে নিয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের রুপা বিবি। তাঁদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন আয়ানের বাবা শেখ আব্দুল আলিমও (৩৮)। একতলা বাড়ির ওই ঘরে জানলা খোলা রেখেই ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁরা। আর ঠিক এই সুযোগটাই কাজে লাগায় এক বা একাধিক দুষ্কৃতী। জানলা দিয়ে ঘরের ভিতর কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালায় তারা। এমনই সম্ভাব্য বিবরণ ঘুরে বেড়াচ্ছে রজতপুরের হাওয়ায়।
আগুন লেগে যায় আলিম, রুপা, আয়ান – ৩ জনের শরীরেই। তাঁদের আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে আসে পাশের ঘরে শুয়ে থাকা বড়ছেলে শেখ রাজ। ঘটনার বীভৎসতা দেখে সেও চিৎকার জুড়ে দেয়। ছুটে আসেন পাড়া-প্রতিবেশী। কিন্তু ততক্ষণে আগুনে পুড়ে ৩ জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক! রুপা, আয়ান ও আলিমকে ওরই মধ্যে কোনওরকমে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান গ্রামবাসীরা। সেখানে তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এরপর ৩ জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকদের যাবতীয় চেষ্টা ব্যর্থ করে সেখানেই মৃত্যু হয় ছোটছেলে আয়ানের। আর তার কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় রুপা বিবির। আব্দুল আলিমের অবস্থাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বর্ধমান মেডিক্যালেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
কিন্তু সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রজতপুর গ্রামে কেন এমন নৃশংস ঘটনা? কারা সুযোগ পেয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারতে চাইল ওই পরিবারকে? বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থলে যায় বোলপুর থানার পুলিশ। তারা এই হত্যালীলার তদন্তে তৎপর। এমন বীভৎসতায় গোটা গ্রাম আতঙ্কে থমথম করছে। আব্দুল আলিম বা তাঁর স্ত্রী রুপা বিবির সঙ্গে সাম্প্রতিক বা পুরনো, যেকোনও ধরনের শত্রুতার সূত্র খুঁজছে পুলিশ।