২৩ কার্তিক ১৪৩২ রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫
২৩ কার্তিক ১৪৩২ রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫

কোচবিহারের উদ্বোধন হলো ট্রমা কেয়ার সেন্টার

High News Digital Desk:

কোচবিহারের উদ্বোধন হলো ট্রমা কেয়ার সেন্টার :-

চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিতে নতুন পালক যোগ হলো কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মুকুটে। বুধবার সাড়ম্বরে উদ্বোধন হলো বহু প্রতীক্ষিত ট্রমা কেয়ার সেন্টারের। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের পর উত্তরবঙ্গে এটি দ্বিতীয় ট্রমা কেয়ার সেন্টার।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বরাবরই পিছিয়ে এই উত্তরবঙ্গ। কয়েক বছর হলো এমজেএন হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে উন্নিত হয়েছে। তা সত্বেও এখনও এখানে সব বিভাগ খোলা সম্ভব হয়নি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ট্রমা কেয়ার সেন্টারের কথা ভাবাও একটা বড় ব্যাপার। তবুও ভাবনাটা এসেছিল করোনাকালে। তারপর থেকে চিন্তা ভাবনা করা, প্রজেক্ট তৈরী ইত্যাদি প্রভৃতি হতে হতে ২০২২ এর সেপ্টেম্বর মাসে সব কিছুর অনুমোদন আসার পর কাজ শুরু করা হয়েছিল। সব চাইতে বড় ব্যাপার ছিম ফান্ড জোগার করা। আনন্দের বিষয়, সমস্ত বাধা বিপত্তি পার করে এক বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে পরিষেবা দেওয়ার জন্য তৈরী হয়ে গিয়েছে এই সেন্টার। ২০ বেডের এই ট্রমা কেয়ার সেন্টারটি তৈরী করতে খরচ হয়েছে ৪ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে একটা বড় অংশ, ৩.৯২ কোটি টাকা সিএসআর ফান্ড থেকে পাওয়ার গ্রিড দিয়েছে। বাকী টাকা বেসরকারী ভাবে জোগার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাওয়ার গ্রিডের পক্ষ থেকে অমিতাভ ভরত বলেন, পাওয়ার গ্রিড নানা রকম জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। তিনি জেলা শাসককে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, তিনি যে ভাবে বারংবার পাওয়ার গ্রিডের সাথে বৈঠক করে এই ফান্ড যোগার করেছেন, তাতে এখানে ফান্ডিং করতে পেরে পাওয়ার গ্রিডও খুশী।

এদিন হাসপাতাল চত্বরে প্রদীপ প্রজ্বলন, নাচ, গানের মধ্যে দিয়ে এই ইউনিট উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এরপর বেলুন উড়িয়ে, ফিতে কেটে উদ্বোধন করা হয় ট্রমা কেয়ার সেন্টারের। এমএসভিপি ডাঃ রাজীব প্রসাদ জানান, আপাতত এই ট্রমা কেয়ার সেন্টার টি লেভেল থ্রি হলেও, এখানের সব যন্ত্রপাতি ও ব্যবস্থা লেভেল টু এর উপযুক্ত। শুধু মাত্র নিউরো সার্জেনের জন্য একটু অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি সেটারও ব্যবস্থা করে ফেলবেন বলে আশাবাদী তিনি। এত বড় একটা উন্নত ট্রমা কেয়ারের চিকিৎসা এখন থেকে দিতে পারবে জন্য স্বভাবতই খুশীর ঝলক তাঁর চোখে মুখে। রুগী কল্যান সমিতির চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায় বলেন, মহারাজারা কোচবিহারবাসীর জন্য নানা উন্নয়ন মূলক কাজ করে গিয়েছেন। আমাদের সরকার সেই পথেই এগোচ্ছে।

কলকাতার বড় বড় হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টার থাকলেও উত্তরবঙ্গে একমাত্র শিলিগুড়ি ছাড়া আর কোথাও এই সেন্টার ছিল না। কোচবিহারে মেডিকেল কলেজ হওয়ার পর চিকিৎসা ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখানের মানুষকে তা সত্বেও বড় কিছু হলে রেফার করতে হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। এই ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু হলে পরে আরও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা যেমন সম্ভব হবে, সেইরকম বাইরে রেফার করাটাও বেশ অনেকাংশে কমে যাবে বলে আশাবাদী জেলাশাসক পবন কাদিয়ান। তিনি বলেন, আজ শুধু রাখি বন্ধন নয়, মানুষের স্বাস্থ্যকে রক্ষা করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কোচবিহারে এই ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু হলে শুধু কোচবিহারবাসী নয়, আশেপাশের জেলার মানুষগুলোও এই চিকিৎসার সুবিধা পাবে। চিকিৎসার দিক দিয়ে আগামীতে অগ্রণী জেলা হিসাবে কোচবিহারকে দেখা যাবে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে সময়ের মূল্য অপরিসীম। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন এক্সিডেন্টের ফলে প্রতি এক মিনিটে ৬ জনের মৃত্যু হয়। সময় মত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারলে এই মৃত্যু হার আটকানো সম্ভব। গুরুতরভাবে জখম ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে ভেন্টিলেশনে দিতে পারলে কিংবা প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের জরুরী অস্ত্র প্রচার করে ফেলতে পারলে তার জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়। এদিন ট্রমা কেয়ার সেন্টার তৈরীর নেপথ্যের সকলকে চারা গাছ দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে

Scroll to Top