২১ কার্তিক ১৪৩২ শুক্রবার ০৭ নভেম্বর ২০২৫
২১ কার্তিক ১৪৩২ শুক্রবার ০৭ নভেম্বর ২০২৫

উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য – তাঁর স্মৃতিমাখা গ্রামের গল্প

প্রতিবেদক :অভিষেক সিংহ

হাওড়া :  পর্দায় সেই হৃদয়-হরা হাসি! এখনও সে-হাসির আবেদন বিন্দুমাত্র মলিন হয়নি। আর সেই অমলিন আবেগ-স্মৃতির পথ ধরেই ফিরে এলো আরও একটি ২৪ জুলাই। মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবস। ১৯৮০ সালে আজকের দিনে গণনাতীত অনুরাগীকে চোখের জলে ভাসিয়ে জীবনাবসান ঘটে তাঁর। মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩!

উত্তমকুমারের মৃত্যুদিনে হাই নিউজের পক্ষ থেকে রইল অপরিসীম শ্রদ্ধা। এই উপলক্ষে মহানায়কের এক প্ৰিয় গ্রামের গল্প তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে।

জগৎবল্লভপুর। রূপকার একসময়ের মহাপ্রতাপান্বিত জমিদার সত্যনারায়ণ খাঁ। আমুদে জমিদারটি ছিলেন চলচ্চিত্র-রসিকও। সাধারণ সিনেপ্রেমী নন। তাঁর ছিল একটি প্রযোজনা সংস্থাও। নাম ‘চণ্ডীমাতা ফিল্মস’। সেই প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে ৩২টি সিনেমা শুট হয়। সে’গুলির বহু দৃশ্য খাস জগৎবল্লভপুরেরই। সেখানকার একাধিক জায়গা তো বটেই, সত্যনারায়ণ খাঁর নিজের বাড়িতেও হয়েছে শুটিং। আর সে’ভাবেই তৈরি হয় ‘বনপলাশির পদাবলী’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘সন্ন্যাসী রাজা’।

মহানায়ক উত্তমকুমারের বড় প্রিয় ছিল এই জগৎবলভপুর। শুধু সিনেমার কাজের জন্য নয়, যখনই ফাঁকা সময় পেতেন, শহরের কোলাহল থেকে জগৎবল্লভপুরের নিরিবিলি গোহালপোতা গ্রামে পৌঁছে যেতেন তিনি। জমিদার সত্যনারায়ণ খাঁর বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করতেন, কাটাতেন বেশ কয়েকটা দিন।

জগৎবল্লভপুর ব্যাপকতর জনপ্রিয়তা পায় ‘ধন্যি মেয়ে’ সিনেমার সৌজন্যে। এই চলচ্চিত্রে একটি মাঠ দেখা গিয়েছিল, যেখানে তেঁতুলগাছে বসে জয়া ভাদুড়ী ঘুঁটের মালা ছুড়ছেন ‘বগলা’কে লক্ষ করে। এই সিনেমায় জয়া ভাদুড়ীর চরিত্রের নাম ছিল মনসা। উত্তম কুমার ছিলেন সর্বমঙ্গলা দলের কোচ, যিনি খেলার দৃশ্যে পাশ থেকে চেঁচিয়ে পেনাল্টিতে গোল করতে নিষেধ করছিলেন। সেইসব দৃশ্য বস্তুত জগৎবল্লভপুরেই শুট করা।

সেই মাঠ এখনও আছে। সত্যনারায়ণ খাঁ তাঁর সম্পত্তি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দান করে গিয়েছেন। মাঠটি এখনও প্রায় অবিকৃত রয়ে গিয়েছে। সেখানে গ্রামের ছেলেরা খেলাধুলো করে আজও। মাঠের পাশের তেঁতুলগাছটিও রয়েছে তেমনি! সত্যনারায়ণ খাঁর বাড়ির দোতলায় দুটি ঘরও রয়েছে আগের মতো। ওইসব ঘরে উত্তম কুমার বহুবার এসে থেকেছেন।

এত কিছু সোনালি স্মৃতির দৌলতে আজকের জগৎবল্লভপুর রোমহর্ষক নয় কি? মহানায়কের চলে যাওয়ার দিনে এই ফিরে পাওয়াও কি মহা মূল্যবান নয়? আমাদের বিবেচনায় অমূল্য। আমাদের শ্রদ্ধায় তাই এমনই স্মরণ রইল হাই নিউজের পাতায়।

Scroll to Top