কলকাতা : বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে তৈরি মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে দলের অবস্থান পরিষ্কার করে অভিষেক বলেন, ‘আমরা বনধের রাজনীতির বিরুদ্ধে। আমরা কর্মনাশা, সর্বনাশা, ধর্মনাশা বনধের বিরুদ্ধে।’ পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের চ্যালেঞ্জ, ‘আমি অনুরোধ করব ভারতীয় জনতা পার্টির বাংলার নেতৃত্বকে যে, প্রতি ২৮ আগস্ট আপনারা পারলে একটা করে বনধ ডাকুন। আপনাদের বনধ কী করে প্রতিহত করতে হয়, বাংলার মানুষ জানেন।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘বাংলার বিরুদ্ধে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুৎসা, অপপ্রচার, চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।… একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকে যারা রাজনীতি করছে, যারা লাশের নোংরা রাজনীতিতে নিজেদের লিপ্ত করেছে, বাংলার মানুষের কাছে তাদের মুখোশ খুলে প্রকৃত চেহারাটা উন্মোচিত হয়েছে।’
সন্দেশখালির ঘটনায় ‘অর্থ-যোগ’ অভিযোগের কথা মনে করিয়ে তৃণমূল সাংসদের দাবি, ‘নারী সুরক্ষা নিয়ে কথা বলার অধিকারই নেই বিজেপির।’ এছাড়া এদিন অভিষেক উন্নাও, কাটুয়া, হাথরাস, বদলাপুর, মণিপুরের প্রসঙ্গ টেনে এনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে ‘নারী বিরোধী, নারী বিদ্বেষী’ বলে দেগে দেন।
গত ১০ বছরের এনসিআরবি তথ্য তুলে ধরে অভিষেক জানান, ‘নারীর প্রতি অপরাধের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ প্রথম। দ্বিতীয় মধ্যপ্রদেশ। তৃতীয় রাজস্থান। চতুর্থ মহারাষ্ট্র। ৪টি রাজ্যেই ডবল ইঞ্জিন সরকার।’ এরপরই রাজ্যের বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণ, ‘পারলে ওই ৪ রাজ্যের ৪ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করবেন। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলবেন।’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বুধবারের বক্তব্যে উঠে আসে মঙ্গলবারের ‘নবান্ন অভিযান’ প্রসঙ্গ। ওই মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নানাধরনের অপরাধী বলে অভিযোগ করেছেন অভিষেক। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ‘ছাত্র পরিচয়’ নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
‘মেয়েদের রাত দখল’ প্রতিবাদ কর্মসূচিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই আন্দোলনের দাবি – ধর্ষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা ও প্রকৃত দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা। আমরা সবাই বলছি, বিচার চাই। আমরা সবাই চাইছি, প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক। আর বিজেপি বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।’ বিজেপি ‘শকুনের রাজনীতি’ করছে বলেও অভিযোগ অভিষেকের। পাশাপাশি, অতীতের বহু ব্যর্থতার নজির টেনে সিবিআইকে তুলোধনা করে অভিষেক উল্লেখ করেছেন, ‘৪ দিন কলকাতা পুলিশের হাতে কেস ছিল। ১৪ তারিখ কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে তদন্তভার হস্তান্তর করে। তারপর ১৪ দিন অতিক্রান্ত। সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির দাবি উঠেছিল আগেই। এখনও কেন সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হননি, সিবিআইকে জবাব দিতে হবে।’ এদিকে খবর, আজই সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করেছে আইএমএ-র ডিসিপ্লিনারি কমিটি।







