কলকাতা : আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-তরুণীর ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা, ফাঁসির দাবিতে মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে পথ হাঁটলেন তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদ, নেতা, মন্ত্রীরা। পথ হাঁটলেন সেলিব্রিটিরাও। এদিন তৃণমূলের পদযাত্রায় পা মেলান বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক।
ডোরিনা ক্রসিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী বন্দোপাধ্যায় একটি সভাও করেন। সেই সভায় আরজি করের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। অপরাধীদের ফাঁসির সাজাও দাবি করেন। পাশাপাশি, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও বিজেপি ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। সিপিএমকে বিঁধতে তাঁর প্রশ্ন, ‘গণধর্ষণ হয়েছিল বানতলায়। কার আমলে ঘটেছিল? বানতলা থেকে ধানতলা, কার আমলে ঘটেছিল? কোচবিহারের নার্স বর্ণালী দত্তকে খুন করা হয়েছিল কার আমলে? সিঙ্গুরের তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল কার আমলে? নন্দীগ্রামে মেয়েদের উপর গণধর্ষণ হয়েছিল কার আমলে? নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল কার আমলে?’
ডোরিনা ক্রসিংয়ের সভায় বিজেপিকেও আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কটাক্ষ, ‘বিলকিস বানোর পরিবারকে হত্যা করেছে কারা? উন্নাওতে ঘটনা ঘটিয়েছে কে? হাথরাসে ঘটনা ঘটিয়েছে কে? মধ্যপ্রদেশে দলিত মহিলাদের উপর যে ঘটনা ঘটেছে, কে করেছে? উত্তরাখণ্ডের নার্সকে খুন, ৯ দিন পরে ডেড বডি পেয়েছে – কার রাজ্য? মনিপুরের ঘটনা কাদের রাজত্বে ঘটেছে? ধর্ষকদের মালা পরিয়েছিল কারা? কুস্তিগীর সাক্ষীকে অত্যাচার কে করেছিল? কোনও বিচার হয়েছিল? অভিযুক্ত সাংসদের প্রমোশন হয়েছে। ছেলে টিকিট পেয়েছে।’
নাম না করে, এদিন রাজ্যপালেরও সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতার প্রশ্ন, ‘বাংলায় মহিলাদের নিরাপত্তা নেই, আপনার বিজেপির রাজত্বে আছে তো?’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলে বিচার হয়, বিজেপির রাজত্বে হয় না।’
এদিন ডোরিনা ক্রসিংয়ের সভা থেকেও কলকাতা পুলিশের তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশংসা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তে সিবিআইকে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ সাহায্য করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি, সমাজ মাধ্যমের খবর প্রসঙ্গে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করেন। এআই-এর প্রসঙ্গ টেনে ফেক নিউজ সম্পর্কে বাংলার মানুষকে হুঁশিয়ার করে দেন মমতা। দলের কর্মীদের উদ্দেশে ‘রামবাম ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ শনিবার প্রতি ব্লকে মিছিল করার কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। ফলে এই নিয়ে আগামী বেশ কিছুদিন শাসক-বিরোধী সংঘাত জারি থাকবে বলেই মনে করছেন রাজ্যবাসী।







