স্মরণে বিধানচন্দ্র রায় : প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের পর পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রীর পদে অভিষিক্ত হন বিধান রায়। তিনি যেমন ছিলেন রাজ্যের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী, তেমনি তিনি একজন সুচিকিৎসকও ছিলেন। তাঁর জন্মদিন চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তিনি বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গকে এক সমৃদ্ধশালী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলেন বিধানচন্দ্র রায়। আজকের নবীন প্রজন্ম হয়তো জানেন না আজকের সল্টলেক তাঁর নিজের হাতে গড়া ১৯৬২ সালের ১ জুলাই প্রয়াণের পর সত্যিই অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছিল বিধানচন্দ্র রায়ের কথা। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক তুলেছে বিরোধীরা। শুনতে হয়েছে নানা কটূক্তি। তবু শেষ পর্যন্ত তাঁকে ‘বাংলার রূপকার’ হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন সকলেই। চিকিৎসক হিসেবে তিনি কিংবদন্তি। পাশাপাশি প্রশাসক হিসেবেও তাঁর দক্ষতা ছিল। ২০১৯ সালে রাজনৈতিক রোষের শিকার হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রূপকার বিধানচন্দ্র রায়। পূর্ব বর্ধমান জেলায় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মূর্তিটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপি একে-অপরকে মূর্তি ভাঙার ঘটনায় দোষারোপ করেও ছিলেন। স্বাধীনতার পরে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়ন ও আধুনিকীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য বিধানচন্দ্র রায়ের ওই আবক্ষ মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের মানকর শহরে। সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায় কেউ বা কারা ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তিটি ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলে রেখেছে। একদা জঙ্গলে ঘেরা দুর্গাপুর, শিল্পাঞ্চলে রূপান্তরিত হয়েছে ডক্টর রায়ের পরিকল্পনার ওপর ভর করে। তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায় দুর্গাপুরে পা রেখে পরিকল্পনা করেন দূর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেডের। জঙ্গলে ঘেরা একটি জায়গাকে তিনি দূর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড গড়ে তোলার জন্য বেছে নেন। ডিপিএল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দুর্গাপুর রূপ বদল হতে শুরু করে। কাজের সন্ধানে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে দুর্গাপুরে। তৈরি হতে থাকে বাজারঘাট, রাস্তা। আরও অন্যান্য কারখানা তৈরি হতে শুরু করে দুর্গাপুর। আস্তে আস্তে শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয় ইস্পাত নগরী দুর্গাপুর।বিহারের পাটনা থেকে মাত্র কয়েক টাকা সম্পদ নিয়ে মানুষটির উদয় হয়েছিল এই রাজ্যে। বিদেশে ডাক্তারি পড়েও বিনা পয়সায় রোগী দেখতে আগ্রহী ছিলেন বেশি। মধ্য কলকাতায় বসবাসের ঘুপচি ঘর, সাদামাটা পোশাক আর চিকিৎসক হয়ে ওঠার কঠিন লড়াইয়ের মধ্যেই অনুরণিত হয়েছিল বিধানচন্দ্রের রাজনৈতিক জীবনও। প্রশাসক হিসেবে তাঁর কৃতিত্বের কথা স্মরণীয় হয়ে রয়েছে
