সাধারণ গ্রন্থাগার দিবসে পালন হল কোচবিহারে :-
অনুরোধ করছি এবছর কোচবিহারের বইমেলা নিয়ে আর ছেলে খেলা করবেন না।” সোমবার রবীন্দ্র ভবনে সাধারণ গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই বললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ‘বই পড়ো জীবন গড়ো’ এই ট্যাগ লাইনকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ গ্রন্থাগার দিবস পালন করা হলো স্থানীয় রবীন্দ্র ভবন মঞ্চে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা শাসক ও ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরী অফিসারের কাছে এই অনুরোধ করেন তিনি। গত বইমেলা কোচবিহার রাসমেলা ময়দানের পরিবর্তে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর দিনহাটায় করা হয়েছিল। পরে দেখা যায় বইমেলার আসল উদ্দেশ্য মেলায় বইপ্রেমীদের আসা এবং প্রকাশকদের বিক্রি, কোনো উদ্দেশ্যই সফল হয়নি। এমন কি কোচবিহার শহর সহ আশে পাশের মহকুমার বইপ্রেমীরাও ব্যাপারটাকে ভালো চোখে দেখে নি। আর দু মাস পরেই জেলা বইমেলা। তার আগে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে প্রকৃত বইপ্রেমীরা।
এদিনে বিভিন্ন স্কুল থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। নবীন প্রজন্মকে বইমুখী করার প্রয়োজনীয়তার কথা সকলের বক্তব্যে উঠে আসে। ২০১৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩১ অগাস্টকে সাধারণ গ্রন্থাগার দিবস হিসাবে ঘোষণা করেন। তার পর থেকেই প্রতি বছর এই দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। অন্যান্য জেলায় ওই দিনই পালিত হলেও বিশেষ কারন বশতঃ কোচবিহারে আজ সাধারণ গ্রন্থাগার দিবস পালিত হল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা শাসক পবন কাদিয়ান বলেন, ই- লার্নিং সহজ হয়ে যাওয়াতে লার্নিং যেন কমে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তিনি বলেন, যে কোন মানুষের কাছে বই একটি অতি প্রিয় সময় কাটানোর মাধ্যম। ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরী অফিসার শিবনাথ দে বলেন, লাইব্রেরী এখন তথ্য সেন্টারে পরিনত হয়েছে। পার্থ প্রতীম রায়ের বক্তব্যেও উঠে আসে বইপড়ার অভ্যাস বাড়ানোর কথা।
কোচবিহারে১০২ টি গ্রামীন গ্রন্থাগার, ৭ টি টাউন লাইব্রেরী এবং একটি স্টেট লাইব্রেরী রয়েছে। লাইব্রেরীয়ানের অভাবে সেখানে একিক জনকে পাঁচ থেকে ছটি লাইব্রেরীর দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। সম্প্রতি ৩৪ টি পদ পুরন করার জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আর দু এক মাসের মধ্যেই আশা করা যাচ্ছে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে কোচবিহারের গ্রামীণ লাইব্রেরী গুলো।
ভারতবর্ষের মধ্যে দুটি সোনায় বাঁধানো বাইবেল রয়েছে। তার একটি রয়েছে কোচবিহারের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারে। এছাড়াও তালপাতার পুঁথি থেকে শুরু করে ভেষজ রঙ দিয়ে হাতে আঁকা বহু দুষ্প্রাপ্য বিজ্ঞান এবং নানা বিষয়ক বই এই গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মূল্য আজকের দিনে কোটি কোটি টাকা দিয়েও কেনা যাবে না। সেগুলোকে ভালোভাবে সংরক্ষণ করার জন্য বইগুলোর ডিজিটালাইজেশনের কথা ভাবা হয়েছে। এই লাইব্রেরীতে বাচ্চাদের বইয়ের সংগ্রহ অসাধারণ বড় বড়দের জন্য নানান ধরনের বই রয়েছে এখানে নিয়ম করে ডব্লিউবিসিএস এর কোচিং দেওয়া হয়। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এত কিছু সত্বেও জলের কোন ব্যবস্থা নেই। বাথরুমের অবস্থা ভয়াবহ। মেনটেনেন্স এর জন্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকা রাজ্যের কাছে যাওয়া হয়েছে তাও প্রায় ৬-৭ মাস হয়ে গেল। অবশ্য খুব শিগগিরই সেই টাকা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী লাইব্রেরীর কর্তৃপক্ষ।