৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫

কাল বাংলায় হরতাল, পাল্টা পথে শাসকদল

কলকাতা : মাঝরাতে স্বাধীনতা পেয়েছিল দেশ। আর ৭৭ বছর পরে নারী আন্দোলনে গর্জে উঠল সারা পশ্চিমবঙ্গ। ১৪ আগস্ট অভিনব প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা। স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছিলেন হাজারে হাজারে মহিলা। সর্বত্রই চলছিল শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ। এর মধ্যে তাল কাটল এই আন্দোলনের আঁতুড় ঘর খোদ আরজি কর হাসপাতালে।

রাত ১২টা ৩০ নাগাদ আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, পুলিশের ব্যারাক সহ একাধিক জায়গায় ভাঙচুর চালালো সশস্ত্র দুষ্কৃতীদল। আন্দোলনকারীদের মঞ্চে ছিঁড়ে ফেলা হয় ব্যানার-পোস্টার। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়িতে। প্রাণ বাঁচাতে পুলিশকর্মীরা আশ্রয় নেন হাসপাতালের অন্দরে। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, অ্যাডিশনাল সিপি (ক্রাইম) সহ লালবাজারের পদস্থ কর্তারা। পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। নামানো হয় র‍্যাফও। প্রায় এক ঘণ্টা পর কিছুটা স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। নিন্দা হয়েছে সর্বস্তরে। আন্দোলনকারীদের ধারণা, তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ থেকে মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই দুষ্কৃতীদের এই ন্যক্কারজনক ঘটনা। প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন নেট-বাসিন্দারাও। ১৬ আগস্ট রাজ্যে ১২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে এসইউসিআই। আজ বিকেলে শিয়ালদা থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে সিপিআইএমের ছাত্র যুব এবং মহিলা সংগঠন।

মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে শুক্রবার থেকে লাগাতার ধরনা কর্মসূচিতে বসতে চলেছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ‘শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় অবস্থান বিক্ষোভ হবে। প্রয়োজনে হবে পথ অবরোধ।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার সারারাত কলকাতার ধরনা মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন সুকান্ত মজুমদার সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। শুক্রবার বিকেলে হাজরা মোড় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি পর্যন্ত মশাল-মিছিল করবে বিজেপির মহিলা মোর্চা।

অন্যদিকে, গতকালই তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, আরজি কর কাণ্ডে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে বিরোধী দলগুলি। নিরপেক্ষ তদন্ত চায় রাজ্য সরকার। বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ১৬ আগস্ট রাস্তায় নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হাঁটবেন মৌলালি থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। ১৭ আগস্ট সব ব্লকে, সব মিউনিসিপ্যালিটিতে বেলা দুটো থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ‘বাম-রামে’র বিরুদ্ধে হবে মিটিং মিছিল। ১৮ তারিখ সব ব্লকে ধরনা হবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত। ১৯ তারিখ রাখিবন্ধন উৎসবের পর অপরাধীর চরম শাস্তির দাবিতে ২০ তারিখ থেকে ফের রাস্তায় নামবে তৃণমূল।

সব মিলিয়ে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে এই ঘটনা। মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Scroll to Top