২৭ কার্তিক ১৪৩২ বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর ২০২৫
২৭ কার্তিক ১৪৩২ বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর ২০২৫

উত্তরবঙ্গ সেই বঞ্চিতই বিজেপির কাছে! পাঁচ সপ্তাহে তৃতীয়বার, সঙ্গে ত্রাণ, চাকরি, ক্ষতিপূরণ নিয়ে হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা

High News Digital Desk:

উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা লন্ডভন্ড হয়েছে বন্যার জেরে। সাধারণ মানুষ হারিয়েছেন স্বজন। চোখের সামনে ভেসে গিয়েছে সব কিছু। যে দিকে দু-চোখ যায় শুধুই জল,হাহাকার। বন্যা পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে দেখতে দুর্যোগের মধ্যেই ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আর এবার তার মধ্যেই ফের একবার উত্তরবঙ্গে পৌছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে শিলিগুড়িতে পা রাখেন তিনি। নজরে দুর্গতদের সাহায্য পাশপাশি জেলা শাসকদের নিয়ে বৈঠক। পাঁচ সপ্তাহে তৃতীয়বার, সঙ্গে ত্রাণ, চাকরি, ক্ষতিপূরণ। মোদি-শাহ? ব্যস্ত অন্যখানে। বিজেপির কাছে এই অঞ্চল ভোটের সময় ভোটব্যাংক, বিপর্যয়ের সময় বিস্মৃত ঠিকানা। যদি তাদের যন্ত্রণা একবারের প্রধানমন্ত্রী সফরের যোগ্য না হয়, তবে তাদের ভোটই বা কেন তাদের নির্বাচনী সার্কাসের যোগ্য হবে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।

মুখ্যমন্ত্রী ৬ অক্টোবরের পর তৃতীয়বার উত্তরবঙ্গে—শোকাহত পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, হোমগার্ডের চাকরি, নষ্ট ফসলের জন্য ফসল বীমা, ভাঙা সেতু পুনর্নির্মাণ সহ একাধিক সাহায্য তুলে দিচ্ছে সরকার। আর প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? উত্তরবঙ্গ এখনও তাঁদের মানচিত্রে খুঁজে পাননি। ব্যালট বাক্স খুললে মনে পড়ে, জলমগ্ন গ্রাম দেখলে ভুলে যান। এটাই বিজেপির সহযোগী ফেডারেলিজমের সংজ্ঞা—ভোট নাও, বিপর্যয় ভুলে যাও।

রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বন্যা কবলিত উত্তরবঙ্গে বারবার নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। নিজেই ছুটে গিয়েছেন বারবার, পাশপাশি জেলা স্তরের নেতাদেরও দেখা গিয়েছে বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে। কেন সেই ভাবে বিজেপির নেতা-নেতৃত্বদের দেখা যায়নি সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। যেই বিজেপি উত্তরবঙ্গকে নিজের শক্ত ঘাঁটি মনে করে, সেখানে কেন তাদের কোনও রকম উদ্যোগ দেখা যায়নি? তাহলে কি সেই বাংলা বঞ্চিতই রয়ে গেল পদ্ণ শিবিরের কাছে? উল্ল্খ যোগ্য ভাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজিরবিহীন যাতাযাত লক্ষ্য করা যায নির্বাচনের আগে। বিহারে চলছে বিধানসভা নির্বাচন, সেখানেও শেষ পর্যায়ের প্রচারে বড় বড় নেতাদের দেখা গিয়েছে। তাহলে উত্তরবঙ্গে কেন নজর নেই তাদের? তাহলে কি শুধু ভোটই টার্গেট, অন্য কিছু নয়।

রাজনৈতিক মহলে এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে, বিজেপি কি তাহলে পরিযাযী পাখিদের আচরণ লক্ষ্য করে তাতেই অনুপরেরণা পাচ্ছে। বঙ্গ বিজেপির কয়েকজন নেতাকে দেখা গেলেও সেই অর্থে বড় বড় নেতাদের দেখা গেল কোথায়? শাসক দলের তরফে কটাক্ষ করা হয়েছে যে ভাবে পরিযায়ী পাখিরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের জায়গা, অবস্থান বদল করে, ঠিক তেমন ভাবেই এবার বিজেপি নেতারাও ভোটের সময় দেখা দেয়। উত্তরবঙ্গের মানুষকে ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে বঙ্গের শাসক দল।

প্রশ্ন উঠছে, আর কিছুদিনের মধ্যেই ভোটের প্রচার শুরু হয়ে যাবে, তবে কি ফের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যাওয়া-আসা শুরু হবে উত্তরবঙ্গে? মোদি-শাহ? ব্যস্ত অন্যখানে। বিজেপির কাছে এই অঞ্চল ভোটের সময় ভোটব্যাংক, বিপর্যয়ের সময় বিস্মৃত ঠিকানা। যদি আমাদের যন্ত্রণা একবারের প্রধানমন্ত্রীি সফরের যোগ্য না হয়, তবে আমাদের ভোটই বা কেন তাদের নির্বাচনী সার্কাসের যোগ্য হবে? তিনটি সফর, তিনটি ত্রাণপ্যাকেজ, একজন মুখ্যমন্ত্রী যিনি উপস্থিত হন। শূন্য সফর, শূন্য সহানুভূতি, দুই কেন্দ্রীয় নেতা যারা নির্বাচনী জয়-উৎসবের পর গায়েব।

Scroll to Top