৩ কার্তিক ১৪৩২ সোমবার ২০ অক্টোবর ২০২৫
৩ কার্তিক ১৪৩২ সোমবার ২০ অক্টোবর ২০২৫

অসহায় পুলিশ, অ্যাকশনে দেরি!

কলকাতা : চিকিৎসক-তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সরব গোটা বাংলা। প্রতিবাদের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। ‘মেয়েরা রাত দখল কর‘ কর্মসূচিতে বুধবার রাত থেকেই জেলায় জেলায় নেমেছিলেন প্রতিবাদী মানুষ। স্বাধীনতার মধ্যরাতে কলকাতার রাজপথে নামেন হাজারো মহিলা। তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন পুরুষরাও। যাদবপুর, বেহালা, অ্যাকাডেমি চত্বর সহ বিভিন্ন জায়গায় চলছিল প্রতিবাদ কর্মসূচি। আরজি কর হাসপাতালের সামনেও চলছিল বিক্ষোভ কর্মসূচি। আরজি করের হাসপাতালের বিপরীতে অবস্থানের ডাক দিয়েছিল সিপিআইএমের ছাত্র যুব সংগঠনও। বৃহস্পতিবার স্বাধীনতার মধ্যরাতে মেয়েরা নতুন করে খুঁজে পেয়েছিল স্বাধীনতাকে। কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় তখন বিচার চেয়ে বিদ্রোহের ঢেউ। রাজপথ তখন মহিলাদের দখলে।

রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে রাতের রাস্তায় সামিল হয়েছিলেন গণনাতীত মানুষ। আচমকাই আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে বদলে গেল পরিস্থিতি। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়ল একদল দুষ্কৃতী! হাতে লাঠি, রড; আবার জাতীয় পতাকাও। তারপর পুলিশের উপর চলল হামলা। কার্যত পালিয়ে বাঁচলেন পুলিশকর্মীরা। ভাঙচুর হল পুলিশের গাড়ি। ভাঙচুর চলল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে। গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু করে হাসপাতালের দ্বিতীয় তল পর্যন্ত ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা। নার্সিং স্টেশন ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আসবাব। হামলা চলে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মঞ্চেও ।

চিকিৎসক থেকে নার্স, সকলে ভয়ে কুঁকড়ে তখন। আহত একাধিক পুলিশকর্মী। হাসপাতালের বাইরেও চলছে পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্টি। একদিকে বেলগাছিয়া ব্রিজ, অন্যদিকে শ্যামবাজার যাওয়ার রাস্তা – মাঝরাতে পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের চলল ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া। ইটের ঘায়ে আহত হল পুলিশ। ঝরল রক্ত। কার্যত পুলিশের হাতের বাইরে চলে গেল পরিস্থিতি।

রাত বাড়ছে। আরজি কর হাসপাতালে তখন মাত্রা ছাড়াচ্ছে গন্ডগোল। রাস্তায় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটাচ্ছে পুলিশ। গ্যাসের ঝাঁঝে ও ধোঁয়ায় ঢেকেছে চারদিক। দেড় ঘণ্টা বাদে ঘটনাস্থলে নামল বাড়তি পুলিশ ফোর্স। সূত্রের খবর, পুলিশ কমিশনারকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় নবান্ন। নির্দেশ পেয়েই আরজি কর হাসপাতালে পৌঁছন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, সঙ্গে পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা। লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

অভিযোগ, ভাঙচুরের সময় পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। পুলিশের সামনেই চলে হামলা। ভয়ে পালিয়ে বাঁচেন কিছু পুলিশকর্মী। জানাচ্ছেন হাসপাতালের কর্মীরা। হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তত ১৫ জন পুলিশকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ কমিশনার দোষ চাপিয়েছেন সংবাদমাধ্যমের উপর। রাতেই বিনীত গোয়েলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রঙ না দেখে, হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি তোলেন তিনি।

আরজি কর হাসপাতালে হামলা চালালো কারা? এখন তাদের চিহ্নিত করার কাজ চালাচ্ছে পুলিশ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Scroll to Top